রাজনীতির ফাঁসে ফের হয়রান কাজের শহর

ফের কাজের দিনে সমাবেশ-মিছিলের জেরে যানজটে নাজেহাল সাধারণ মানুষ। শহিদ মিনারের সামনে রাজ্যের বিরোধী একটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশ উপলক্ষে মঙ্গলবার দুপুরে শহরের প্রাণকেন্দ্র অচল হয়ে পড়ে। একই সময়ে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের একটি বিজয় মিছিল বেরোয় শিয়ালদহের সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে। সেটি শেষ হয় কলেজ স্ট্রিটে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৩৬
Share:

যানজটে অবরুদ্ধ ধর্মতলা। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

ফের কাজের দিনে সমাবেশ-মিছিলের জেরে যানজটে নাজেহাল সাধারণ মানুষ।

Advertisement

শহিদ মিনারের সামনে রাজ্যের বিরোধী একটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশ উপলক্ষে মঙ্গলবার দুপুরে শহরের প্রাণকেন্দ্র অচল হয়ে পড়ে। একই সময়ে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের একটি বিজয় মিছিল বেরোয় শিয়ালদহের সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে। সেটি শেষ হয় কলেজ স্ট্রিটে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে।

শহিদ মিনারের সমাবেশে যোগ দিতে শিয়ালদহ, এস এন ব্যানার্জি রোড, ব্রেবোর্ন রোড, রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, জওহরলাল নেহরু রোড থেকে মিছিল আসে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের বিজয় মিছিল রাজা রামমোহন সরণি হয়ে কলেজ স্ট্রিটে শেষ হয়। এর ফলে শিয়ালদহ, সূর্য সেন স্ট্রিট-সহ বিভিন্ন রাস্তায় যানজট হয় বলে জানায় পুলিশ।

Advertisement

ধর্মতলায় অফিসে আসার জন্য পার্ক স্ট্রিটের মুখে গাড়ি নিয়ে আটকে পড়েন সিঁথির বাসিন্দা বুধেশ্বর রায়। তিনি বলেন, “ট্রাফিক পুলিশ আমার গাড়ি রেড রোড দিয়ে ঘুরিয়ে দেয়। তার পরেও আমার অফিস পৌঁছতে ঘণ্টাখানেক সময় লেগে যায়।” একই অভিযোগ টালিগঞ্জের শিবম রায়ের। তিনি বলেন, “টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো থেকে ট্যাক্সিতে উঠেছিলাম দুপুর একটা নাগাদ। মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছই দুপুর সাড়ে তিনটের সময়ে।”

ট্রাফিক-কর্তারা জানান, বিরোধী একটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য যে সব রাস্তা দিয়ে মিছিল এসেছে, সেই সব রাস্তা থেকে বাস এবং অন্যান্য যানবাহন ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। ফলে এ দিন দুপুরে রাস্তায় বেরিয়ে দুর্ভোগের শিকার হতে হয় বহু মানুষকে। গন্তব্যে পৌঁছতে কালঘাম ছুটে যায় অনেকের। যে দুর্ভোগের হাত থেকে রেহাই মেলেনি পড়ুয়াদেরও। মধ্য কলকাতার এক নামী স্কুলের পড়ুয়া নবোত্তমা সান্যাল বলেন, “স্কুল থেকে বেরিয়ে বালিগঞ্জের বাড়িতে পৌঁছতে দু’ঘণ্টা সময় লেগেছে। অন্য দিন পঁয়তাল্লিশ মিনিটের মধ্যে বাড়ি পৌঁছে যাই।”

এ দিন দুপুরে শহরের প্রাণকেন্দ্র কার্যত অচল হয়ে পড়ে। বিভিন্ন রাস্তায় দীর্ঘ ক্ষণ সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে যানাবাহন। কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে খবর, মিছিলের জন্য দুপুর বারোটা থেকেই শহরের বিভিন্ন রাস্তায় বহু গাড়ি আটকে যায়। পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে সাড়ে চারটে বেজে যায়।

সাধারণ মানুষকে কেন এমন দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হল? কাজের দিনে কেন রাজনৈতিক দলগুলিকে সমাবেশ এবং মিছিল করার অনুমতি দেওয়া হয়? এই সব প্রশ্নের উত্তরে লালবাজারে পুলিশের এক কর্তা বলেন, “যে কোনও রাজনৈতিক দল তাঁদের কর্মসূচি ঠিক করার পরে পুলিশের কাছে অনুমতি চাইতে আসে। সে ক্ষেত্রে আমাদের কার্যত কিছুই করার থাকে না। তবে কাজের দিনে সমাবেশ-মিছিল না করার বিষয়ে রাজনৈতিক দলের নেতাদেরও সচেতন হওয়া দরকার। না হলে এই সমস্যা থেকে নিস্তার মিলবে না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement