রাত পোহালেই শুরু রাজ্য সম্মেলন। জনসভার শেষ মুহূর্তের প্রস্ততি খতিয়ে দেখে গেলেন বিমান বসু। ব্রিগেডে দেবাশিস রায়ের তোলা ছবি।
আশা-আকাঙ্ক্ষার দোলাচলে এ বার সিপিএমের ব্রিগেড সমাবেশ হচ্ছে।
আজ, রবিবার ব্রিগেডে দশ লক্ষ মানুষের সমাবেশ হবে বলে শনিবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু জানিয়েছেন। তাঁর ধারণা, এ যাবৎ বড় ব্রিগেডের মধ্যে আজকের সমাবেশ হবে অন্যতম। এ দিন থেকেই দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার মানুষ কলকাতায় আসা শুরু করেছেন। দক্ষিণবঙ্গের ১৩টি জেলা থেকেই ব্রিগেডে লোক আসবেন বলে বিমানবাবু জানিয়েছেন। তুলনায় উত্তরবঙ্গ থেকে লোক আসবে কম। বস্তুত, পুরভোটের আগে রাজ্য সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বড় জমায়েত করে সিপিএম প্রমাণ করতে চায়, তারা এখনও জনসমর্থনে বিজেপির থেকে অনেক এগিয়ে। তারাই তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ।
দলের ২৪ তম রাজ্য সম্মেলনের খসড়া প্রতিবেদনেই স্বীকার করা হয়েছে, গত বছর লোকসভা ভোটের আগে ৯ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশ হয়েছিল। প্রচুর লোক হয়েছিল সেই সমাবেশে। ভিড়ের বহর দেখে পার্টি কর্মীরা উৎসাহিত হয়েছিলেন। কিছুটা আত্মন্তুষ্টি এসেছিল তাঁদের। কিন্তু লোকসভা ভোট এবং তার পরবর্তীতে বিভিন্ন উপনির্বাচনেও বামেদের, বিশেষত সিপিএমকে পর্যুদস্ত হতে হয়েছে। এ বারে ব্রিগেডে লোক এলে দলীয় নেতা-কর্মীরা উৎসাহিত হবেন। সিপিএম নেতা-কর্মীরা মনে করবেন, এখনও পার্টির ডাকে মানুষ আসে। এটাই তাঁদের সান্ত্বনা হবে।
আরএসপি-র রাজ্য সম্পাদক ক্ষিতি গোস্বামী অবশ্য বামেদের সভায় ভিড় নিয়ে সন্দিহান। এ দিন রানাঘাটে তিনি বলেন, “গত চার বছর রাজ্যের ক্ষমতায় না থাকার জন্য আমাদের সভায় আর ভিড় হয় না। আমরা মানুষের আস্থা হারিয়েছি।”
ব্রিগেডে যদি রেকর্ড ভিড় হয়, তার প্রতিফলন কি পুরভোটে দেখা যাবে? বিমানবাবু, দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শ্যামল চক্রবর্তী, রবীন দেবরা কিন্তু ইতিবাচক জবাব দিতে পারেননি। শ্যামলবাবু বলেন, ‘‘এত মানুষ যে এখনও আমাদের সঙ্গে আছেন, তৃণমূল এবং বিজেপি নেতৃত্ব তা বুঝতে পারবেন।”
বিগত ১০ বছর ধরে ব্রিগেড সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কিন্তু এ বার তাঁর ভূমিকা সভাপতির। দলের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট, রাজ্য থেকে রাজ্যসভার সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি, রাজ্য সম্পাদক বিমানবাবু এবং বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র আজ ব্রিগেডে প্রধান বক্তা। এ ছাড়া, দলের সংখ্যালঘু মুখ মহম্মদ সেলিম এবং মহিলা সমিতির নেত্রী রেখা গোস্বামীও রয়েছেন বক্তার তালিকায়। আজকের ব্রিগেড থেকে ‘স্বৈরাচারী’ তৃণমূল শাসনের অবসান ঘটানো এবং ‘সাম্প্রদায়িক’ বিজেপিকে মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন করার ডাক দেওয়া হবে। সাম্প্রদায়িকতার মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই বৃহত্তর বাম ঐক্য গড়ার প্রচেষ্টা শুরু করেছে বামফ্রন্ট এবং তার বাইরের বাম দলগুলি। সেই প্রেক্ষিতে সিপিএম এবং সিপিআইয়ের পার্টি কংগ্রেসে আমন্ত্রণ পেয়েছেন এসইউসি-র সাধারণ সম্পাদক প্রভাস ঘোষ। এসইউসি নেতৃত্ব জানান, প্রভাসবাবু ওই আমন্ত্রণ রক্ষা করবেন।