মেলায় চলছে কেনা-বেচা। ছবি:শৌভিক দে।
সন্ধ্যার পরেই ঢল নামছে মানুষের। জমে উঠেছে বিধাননগর মেলা। তবে পাশাপাশি রয়ে গিয়েছে কিছু বিতর্কও।
করুণাময়ী মোড়ের কাছে সেন্ট্রাল পার্কের বাইরে স্থায়ী মেলা প্রাঙ্গণে চলছে মেলা। বিভিন্ন জেলা, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মিশর, তুরস্কের রকমারি পসরা নিয়ে হাজির হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এই মেলা চলবে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত।
বিতর্ক অবশ্য এই মেলার নিত্যসঙ্গী। বর্তমান প্রশাসনের হিসেবে মেলার বয়স মাত্র চার। কিন্তু বাসিন্দাদের কাছে বিধাননগর মেলা এই বছর পঁচিশে পা দিল। ১৯৯০ থেকে বিধাননগরবাসীর মধ্যে মেলবন্ধন বাড়াতে চালু হয়েছিল বিধাননগর মেলা। এর জন্য গড়া হয়েছিল মেলা কমিটিও। ‘আমার মেলা, তোমার মেলা, সকলের মেলা-বিধাননগর মেলা’-এই শ্লোগান তখন মুখে মুখে ফিরত।
সেই বিধাননগর মেলার চরিত্র পরিবর্তন শুরু হয়ে গিয়েছিল অনেক দিন আগেই। এমনই মত বাসিন্দাদের। চার বছর আগে মেলা পরিচালনায় স্বচ্ছতার অভাবের অভিযোগ তোলে বর্তমান শাসক দল তৃণমূল। মেলার পরিচালন ভার বিধাননগর মেলা কমিটির হাত থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় সরাসরি পুরসভাকে। নতুন নামে ফের শুরু হয় মেলা।
তাতেও বিতর্ক পিছু ছাড়েনি। এ বছরও ব্যতিক্রম হয়নি। খোদ শাসক দলের বিধায়ক পুরসভার মেলা করার অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফের বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন। যদিও বিতর্ক নিয়ে হেলদোল নেই বিধাননগরবাসীর। তাঁরাই জমিয়ে তুলেছেন মেলা। শীতের মরশুমে রকমারি পোশাক সম্ভার, ঘর সাজানোর সামগ্রী, বাংলাদেশের জামদানি থেকে পাকিস্তানের শ্বেতপাথরের রকমারি ভাস্কর্য যেমন রয়েছে, পাশাপাশি পিঠে-পুলি থেকে শুরু করে রকমারি খাবারের স্টলও রয়েছে। ছোটদের জন্যও নানা জিনিস মজুত। সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে চারশো স্টল রয়েছে এই মেলায়। স্থায়ী মেলাপ্রাঙ্গণ হওয়ায় গাড়ি পার্কিং-সহ অনেক ব্যবস্থাই রয়েছে।
তবে মেলা পরিচালনায় একটি জায়গায় কিছুটা হলেও তাল কেটেছে বলেই অভিমত বাসিন্দাদের একাংশের। তাঁদের বক্তব্য, মেলার সাংস্কৃতিক মঞ্চ মেলবন্ধনের মূল জায়গা। প্রতিটি ব্লক থেকে বাসিন্দারা অংশ নিতেন নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। কিন্তু এ বারে শুধু প্রতিষ্ঠিত কিংবা আমন্ত্রিত শিল্পীদের ভিড়। তুলনায় কিছুটা হলেও ব্রাত্য এলাকার শিল্পীরা।
বিধাননগরের এক শিল্পীর দাবি, ‘‘আগে স্থানীয়দের সুযোগ দেওয়া হোক।’’ উদ্যোক্তাদের দাবি, ২০-২২ দিনের মেলার প্রতি সন্ধ্যায় যথাসম্ভব শিল্পীদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, ডগ শো, পুষ্প প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেখানে বাসিন্দারাও অংশ নিচ্ছেন।