ছিনতাই থেমে নেই শহরে। ফের মঙ্গলবার কলকাতা ও বিধাননগরে দু’টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এক দিকে ভরদুপুরে বিধাননগরের করুণাময়ী আবাসনের ভিতরের রাস্তায় ছিনতাই হয়েছে, অন্য দিকে সন্ধ্যায় ছিনতাই হল প্রগতি ময়দানের মেট্রোপলিটন এলাকায়। ফলে নিরাপত্তা নিয়েও ফের প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা।
পুলিশ জানায়, প্রথম ঘটনাটি ঘটে করুণাময়ী আবাসনের ভিতরে অস্থায়ী থানার ১০০ মিটারের মধ্যে। ওই আবাসনের বাসিন্দা কঙ্কণা দে পাশের ব্লকে বন্ধুর বাড়িতে যাচ্ছিলেন। আচমকা মোটরবাইকে দুই যুবক তাঁর সামনে এসে দাঁড়ায়। মহিলার দাবি, দু’জনেই হেলমেট পরা ছিল। বাইকের পিছনে বসা যুবক এসেই ছিনিয়ে নেয় মহিলার গলার হার। ধস্তাধস্তিতে পড়ে গিয়ে হাতে আঘাত লাগে কঙ্কণাদেবীর বিধাননগর পূর্ব থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
কিছু দিন আগে ভোরে ওই আবাসনেই দোতলার একটি ফ্ল্যাটের জানলায় হাত গলিয়ে ঘুমিয়ে থাকা এক বৃদ্ধার গলা থেকে হার ছিনিয়ে নেয় দুষ্কৃতী।
বিধাননগরবাসীদের অভিযোগ, কোনও সময়েই বিপদ কাটছে না। নিজেদের ঘরের জানলা খোলারও উপায় নেই। সেখানেও হানা দিচ্ছে ছিনতাইবাজরা।
যদিও বিধাননগর পুলিশের এক কর্তা জানান, ছিনতাই নিয়ে তাঁরাও উদ্বিগ্ন। তবে পর পর বেশ কিছু অভিযানে একাধিক দুষ্কৃতী দল ধরা পড়েছিল। চুরি, ছিনতাইয়ের মতো ঘটনাও কমেছিল। কিন্তু ফের কোনও চক্র সক্রিয় বলে মনে হচ্ছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ দিনই সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ প্রগতি ময়দানের মেট্রোপলিটন এলাকায় ছেলেকে টিউশনে নিয়ে যাওয়ার সময়ে জ্যোতি বাগরি নামে এক মহিলার গলা থেকে হার ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেয় মোটরবাইকে আসা দুই দুষ্কৃতী। তাদের কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না। জ্যোতিদেবী পুলিশে অভিযোগ করে জানান, তাঁর গলায় ২৫ গ্রাম ওজনের একটি সোনার হার ছিল।
গত বছর ‘ক্রাইম কনফারেন্সে’ শহরে ছিনতাইয়ের বাড়বাড়ন্তে নিজের উদ্বিগ্নতার কথা জানিয়েছিলেন স্বয়ং কলকাতা পুলিশের কমিশনার। তার পরে লাগাতার অভিযান চলেছে। লালবাজার সূত্রে খবর, গত বছরে দেড়শোটির মতো ছিনতাই হয়। তার অর্ধেকেরও বেশির কিনারা করেছে পুলিশ। গত বছরে বাঁশদ্রোণী, রিজেন্ট পার্ক, হরিদেবপুর, সার্ভে পার্ক এলাকায় মোটর বাইকে করে ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে গিয়েছিল। এর পরেই ধরা হয় কাজল এবং দেবব্রত নামে এলাকার দুই যুবককে।
পুলিশের দাবি, মোটরবাইকে করে ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের বেশিরভাগই শিক্ষিত পরিবারের। গত বছরে যাদের ছিনতাইয়ের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল, কাউন্সেলিংয়ের পরে তাদের বেশিরভাগই মূলস্রোতে ফিরে এসেছে। তাই এ বছরে তুলনামূলক ভাবে ছিনতাইয়ে লাগাম টানা যাবে বলেই পুলিশের একাংশের ধারণা।