পাল্টানো স্বাদে সাধের আড্ডায় মাতছে ‘নতুন’ কলকাতা

চলকে-পড়া ইনফিউশন আর ‘কবিরাজি কটলেট’-এর জমানা থেকে এ এক অন্য উড়ান। আড্ডা চাই! মিউজিক চাই! মদ্য চাই! চাই খোলা হাওয়ার দুনিয়ায় দেশ-বিদেশের খানার সুলুকসন্ধান। এই পাল্টানো সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন কলকাতার স্বাক্ষর এখন মিলতে শুরু করেছে শহরের নতুন-নতুন বেশ কিছু ঠিকানায়।

Advertisement

ঋজু বসু

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:৫০
Share:

একটি রেস্তোরাঁর বর্ষপূর্তিতে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় এবং মিমি চক্রবর্তী। বৃহস্পতিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

চলকে-পড়া ইনফিউশন আর ‘কবিরাজি কটলেট’-এর জমানা থেকে এ এক অন্য উড়ান।

Advertisement

আড্ডা চাই! মিউজিক চাই! মদ্য চাই! চাই খোলা হাওয়ার দুনিয়ায় দেশ-বিদেশের খানার সুলুকসন্ধান। এই পাল্টানো সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন কলকাতার স্বাক্ষর এখন মিলতে শুরু করেছে শহরের নতুন-নতুন বেশ কিছু ঠিকানায়। আর অতিথিদের মন জয়ে নিত্যনতুন চমক রচনায় কোমর বেঁধে নামছে সেই সব ঠিকানাও।

ফোরামের ‘কাফে মেজুনা’ যেমন এগ-মাটন রোলের শহরকে অন্যতর রোল-র‌্যাপের মহিমা বোঝাতে আদাজল খেয়ে মেতেছে। মেক্সিকান ঘরানার ‘রোল’ কাসাদিয়া বা বুরিতো-র নামগুলো বাঙালির কাছে এখন মোটেও হিব্রু-লাতিন নয়। বরং তেল চুঁইয়ে পড়া রোলে সসের ছড়াছড়ি বা বেমক্কা লঙ্কায় কামড়ের বদলে ভুট্টার আটার ফিনফিনে তরতিয়া মোড়া পুরে ঝালহীন মেক্সিক্যান লঙ্কা হালাপিনোর মোচড়টাই অনেকে বেশি উপভোগ করছেন। গুচ্ছের বেসনের ব্যাটার-হীন চিংড়িতে মেক্সিকান পানীয় তাকিলার প্রলেপেও খিদে চাগিয়ে উঠছে ঘন-ঘন অফশোর পাড়ি দেওয়া একেলে বাঙালির।

Advertisement

শুধু কাফে মেজুনাই নয়। কাছেই বাইকার্স কাফে কিংবা কোয়েস্ট মল-এর আইরিশ কাফে-য় ঢুকলেও এই গ্লোবাল বাঙালিয়ানার সঙ্গেই মোলাকাত হবে। নিছক কন্টিনেন্টাল বা মেক্সিকান, ইতালিয়ান ক্যুইজিনের বদলে টেক্স-মেক্স বা মেক্সিফোর্নিয়ার রকমারি ফিউশন ঘরানার নাম ঘুরপাক খাচ্ছে বাতাসে। এ সব রেস্তোরাঁর সঙ্গে সাবেক পার্ক স্ট্রিটের কেতাদুরস্ত ভোজের আকাশ-পাতাল ফারাক। রীতিমতো আমুদে আবহ। কিন্তু শহরের সেকেলে পানশালার স্খলিত মেজাজের সঙ্গেও মিলবে না। অনেকটা কলেজ স্ট্রিট কফি হাউজের ঢঙেই নতুন কলকাতার এ সব আমোদের ঠেকেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডায় মেতে থাকে ২৫ থেকে ৬৫— বিভিন্ন বয়সের ‘তরুণ-তরুণী’রা। যার বয়স যতই হোক, এ সব ঠেকে ঢুকলে, কাউকে এক বারও প্রৌঢ় ভাবলে, মহাভুল হয়ে যাবে।

আমনাগরিকের মনের তারুণ্যকে মর্যাদা দিয়েই নতুন কলকাতার খানাপিনা, তার শরীরগতিকটাও অবহেলা করছে না। বুরবোঁ হুইস্কির প্রলেপ-জড়ানো চিকেনে খানিক আ-ঝালা পিঙ্ক পেপার বা মরিচের উজ্জীবন। এ ঝালে আরাম আছে, জ্বালা নেই। শহরের সুরারসিকদের চাহিদাও কত পাল্টেছে, তা মালুম হবে এ তল্লাটে গেলেই। পুঁচকে টাকিলা শট বা টাকিলায় ছোট্ট চুমুকে ইদানীং মিশছে নানা কিসিমের স্বাদগন্ধ। লিচু, লেবুপাতার ঘ্রাণ কিংবা চকোলেট-লঙ্কার অভিঘাতও একেলে সুরাপানে মাত্রা আনছে। সুরারসিকদের প্রিয় উগ্রতেজ ‘লং আইল্যান্ড টি’ ককটেলটিতেও এখন অভিনব সৃজনশীলতা আমদানি করছে ‘কাফে মেজুনা’। নতুন কলকাতার ‘ডাল-ভাত’ ফিনফিনে থিনক্রাস্ট পিৎজা, বিয়ারগন্ধী মাছভাজা বা মরোক্কান সুজি কুসকুসযোগে ল্যাম্ব চপের সঙ্গে এই রংবেরঙের সুরার ছোঁয়াতেও জীবন এখন টইটম্বুর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement