ছিঁড়ল ফোনের কেবল, বিঘ্নিত পরিষেবায় নাকাল দমদমবাসী

দুই সরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব। তার জেরে ভুগলেন কয়েক হাজার মানুষ। বিকল হল বাড়ির ল্যান্ডলাইন, ব্যাঘাত ঘটল ব্যাঙ্কিং পরিষেবায়। বুধবার সকাল থেকেই দমদম-নাগেরবাজার এলাকায় বিএসএনএল-এর প্রায় আটশো ল্যান্ডলাইন বিকল হয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় পাঁচটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা। কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফিরে যেতে হয় গ্রাহকদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৪ ০১:১২
Share:

দুই সরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব। তার জেরে ভুগলেন কয়েক হাজার মানুষ। বিকল হল বাড়ির ল্যান্ডলাইন, ব্যাঘাত ঘটল ব্যাঙ্কিং পরিষেবায়।

Advertisement

বুধবার সকাল থেকেই দমদম-নাগেরবাজার এলাকায় বিএসএনএল-এর প্রায় আটশো ল্যান্ডলাইন বিকল হয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় পাঁচটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা। কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফিরে যেতে হয় গ্রাহকদের। বিএসএনএল সূত্রের খবর, রাস্তার নীচের কেবল ছিঁড়ে যাওয়াতেই এই বিপত্তি।

বিএসএনএল-এর অভিযোগ, রাস্তা খোঁড়ার সময়ে কেএমডিএ কেবল ছিঁড়েছে। ফোন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় না রেখে কাজ করার জন্যই এই বিপত্তি। কেএমডিএ অবশ্য পাল্টা অভিযোগ জানিয়েছে বিএসএনএল-এর বিরুদ্ধে।

Advertisement

দমদম এলাকায় জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আরবান রিনিউয়াল মিশন (জেএনএনইউআরএম) প্রকল্পে জলের পাইপ বসানোর কাজ চলছে। তার জন্য যশোহর রোড এবং অন্যান্য রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। সেই কাজ করতে গিয়েই মঙ্গলবার রাতে নাগেরবাজারের কাছে যশোহর রোডে বিএসএনএল অফিসের সামনে রাস্তার নীচের কেবল ছিঁড়ে যায়।

বিএসএনএল-এর অভিযোগ, জলের পাইপ বসানোর কাজ শুরুর আগে কেএমডিএ-কে বারবার এ ব্যাপারে জানিয়েছিল তারা। রাস্তা খোঁড়ার সময়ে সমন্বয় বজায় রাখার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। তখন কথা হয়েছিল, খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলাকালীন বিএসএনএল কর্মীরা কেএমডিএ-র সঙ্গে থাকবেন। সংস্থার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (বিধাননগর) জয়ন্ত কোলের কথায়, “রাস্তা খোঁড়ার সময়ে আমাদের কর্মীরা থাকলে এমন বিপর্যয় ঘটত না। কারণ, রাস্তার নীচে কোথায় কেবল রয়েছে, তাঁরা জানেন। সেই তথ্য কেএমডিএ-কে তাঁরা দিতে পারতেন।” কিন্তু অভিযোগ, এই প্রস্তাব কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ মানেননি। বিএসএনএল সূত্রের দাবি, শুধু এ দিনই নয়। গত এক মাসে এমন ঘটনা বারবার ঘটেছে। তবে এ দিনের ঘটনা অনেক বড় মাপের। এর আগে ব্যাঙ্ক পরিষেবায় এমন ব্যাঘাত ঘটেনি।

বিএসএনএল জানিয়েছে, ওই এলাকায় বেশির ভাগ ব্যাঙ্কের শাখাতেই বিএসএনএল-এর ‘লিজড’ লাইন ব্যবহার করা হয়। রাস্তা খোঁড়ার সময়ে ইন্টারনেটের কেবল কেটে ফেলাতেই পাঁচটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি ‘কোর ব্যাঙ্কিং সলিউশন’ ব্যবস্থার অধীনে।

ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় শাখাগুলির কাজকর্ম ব্যাহত হয়। নাগেরবাজারের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা ম্যানেজার বলেন, “এই বিপর্যয়ে আমাদের গ্রাহক পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে।”

বিএসএনএল-এর ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার (দমদম) অজিতকুমার বসাক জানিয়েছেন, সকালে এই বিপর্যয়ের কথা জানা যায়। তার পর থেকে লাইন সারাইয়ের কাজ শুরু হলেও বিকেলের আগে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। ব্যাঙ্কগুলিতে বিকেলের পরে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হলেও পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। এই বিপর্যয়ে গ্রাহকেরাও অসন্তুষ্ট। বিএসএনএল সূত্রের খবর, সকাল থেকেই মল রোড, নাগেরবাজার-কাজীপাড়া থেকে একের পর এক গ্রাহক ফোন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সমন্বয় না থাকার কথা প্রকারান্তরে মেনে নিয়েছেন কেএমডিএ কর্তৃপক্ষও। তবে সংস্থার ডিজি (জল সরবরাহ) রজতমোহন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, রাস্তা খোঁড়ার আগে জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলিকে লিখিত ভাবে জানাতে হয়। এ ক্ষেত্রেও সেই নিয়ম মেনে বিএসএনএল-কে জানানো হয়েছিল। কিন্তু বিএসএনএল-এর তরফে পাল্টা উত্তর মেলেনি। রজতবাবুর কথায়, “জলের পাইপ বসানোর কাজ তড়িঘড়ি শেষ করতে হয়। উত্তরের অপেক্ষায় বসে থাকলে কাজে দেরি হত।” তবে তিনি এ-ও জানান, এ দিনের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে সমন্বয়ের উপরে জোর বাড়ানো হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement