দুপুর সওয়া ১টার মধ্যে পৌঁছতে হবে ডন বস্কো স্কুলে। তাই খানিকটা সময় হাতে নিয়ে মঙ্গলবার ১২টার সময় মুদিয়ালির বাড়ি থেকে বেরোন সৌম্যা মুখোপাধ্যায়। এ দিন ছিল ছেলে অভিরূপের আইএসসির অঙ্ক পরীক্ষা। সৌম্যার কথায়, “প্রচণ্ড যানজট পেরিয়ে কোনও মতে বেকবাগান মোড় পর্যন্ত যাওয়ার পরে গাড়ি নড়ছিল না। গাড়ি থেকে নেমে দৌড়তে শুরু করল ছেলে, সঙ্গে আমিও।” মিনিট পাঁচেক বাদে স্কুলে পৌঁছন তাঁরা।
ওই স্কুল থেকেই আইএসসি দিচ্ছে রোহন গোম্স। বাড়ি ঠাকুরপুকুরে। মায়ের সঙ্গে আসার পথে তাদের গাড়ি আটকে যায় হাজরা মোড়ের যানজটে। রোহনের মা পার্ল গোমস পরে বলেন, “এতটা রাস্তা পেরিয়ে কী ভাবে পৌঁছব বুঝতে পারছিলাম না! অবশেষে অটো ধরে নির্ধারিত সময়ের মিনিট ১৫ বাদে স্কুলে পৌঁছই।” একই কারণে পরীক্ষার হলে পৌঁছতে দেরি হয় সেন্ট জেম্স স্কুলের দুই পরীক্ষার্থীরও। তবে তাদের অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয় বলে স্কুল সূত্রে খবর।
পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার পৌনে ১২টা নাগাদ মল্লিকবাজার, মৌলালিতে একটি অবরোধ শুরু হয়। তা ছড়ায় পার্ক সার্কাস, পার্ক স্ট্রিট এলাকায়। ফলে যান আটকে থাকে এপিসি রোড, এজেসি বসু রোড ফ্লাইওভার, শেক্সপিয়র সরণি, এসএন ব্যানার্জি রোড-সহ দক্ষিণ ও মধ্য কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকায়। যে এলাকায় অবরোধ হয় সেখানে বেশ কিছু আইসিএসই, সিবিএসই স্কুল রয়েছে। অবরোধের জেরে নিত্যযাত্রীদের পাশাপাশি এ দিন নাকাল হন পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা।
আইএসসি পরীক্ষা শুরু হয় ২টো থেকে। সাধারণত বেলা দেড়টার মধ্যে স্কুলে পৌঁছতে হয় পরীক্ষার্থীদের। তার ঘণ্টা দুয়েক আগে থেকে শুরু হওয়া অবরোধের জেরে অনেক পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছয়। পার্ক সার্কাস অঞ্চলের এক স্কুলছাত্রের অভিভাবকের বক্তব্য, “এ দিন যে পরীক্ষা আছে, সেটা তো পুলিশ-প্রশাসনের অজানা ছিল না। তা সত্ত্বেও অবরোধ-বিক্ষোভের জেরে এ ভাবে যানজট হল। হয়রান হল ছাত্রছাত্রীরা!” হেনস্থা হওয়া অভিভাবকদের অনেকেরই প্রশ্ন, পরীক্ষার্থীদের গাড়িগুলিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে যানজট মুক্ত করার ব্যবস্থা করল না কেন পুলিশ?
পুলিশ জানায়, অবরোধ শুরু হয় ১২ টায়। মল্লিক বাজারের অবরোধ ওঠে পৌনে দুটে নাগাদ। পার্কসার্কাসের অবরোধ ওঠে বেলা আড়াইটেয়। ততক্ষণে মহানগরীর বড় একটা অংশে জট পাকিয়ে গিয়েছে যানবাহন।