তরুণকে খুনের ১২ দিন পরেও কাটল না ধোঁয়াশা

শুক্রবারও নিমতা থানায় আসেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। তিনি বলেন, ‘‘তদন্ত এগোচ্ছে। সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ সূত্রের খবর, তদন্তের স্বার্থে দেবাঞ্জনের বান্ধবীকেও একপ্রস্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৩০
Share:

দেবাঞ্জন দাস

দমদমের দেবাঞ্জন দাসকে খুনের জন্য সুপারি কিলার ভাড়া করা হয়েছিল, না কেউ নিজেই গুলি চালিয়েছিল— তদন্তে নেমে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। পাশাপাশি তদন্তকারীদের অনুমান, ত্রিকোণ প্রেমে সম্পর্কের টানাপড়েনের জেরেই তরুণকে খুন করা হয়েছে।

Advertisement

শুক্রবারও নিমতা থানায় আসেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। তিনি বলেন, ‘‘তদন্ত এগোচ্ছে। সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ সূত্রের খবর, তদন্তের স্বার্থে দেবাঞ্জনের বান্ধবীকেও একপ্রস্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। যদিও সেই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি পুলিশকর্তারা। এ দিন নিমতা থানায় এসে দেবাঞ্জনের গাড়িটি পরীক্ষা করে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা।

ময়না-তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, দেবাঞ্জনের ডান কনুই ছাড়াও আর একটি গুলি ঘাড়ের বাঁ দিক দিয়ে ঢুকে ডান দিক ফুঁড়ে বেরিয়ে ছিল। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, চালকের পিছনের আসনে বাঁ-দিকে বসা কেউ খুব কাছ থেকে গুলিটি চালিয়েছিল। প্রশ্ন হল, তা হলে কি খুনিরা দেবাঞ্জনের পরিচিত? না হলে তারা ওই গাড়িতে উঠল কী ভাবে?

Advertisement

অন্য দিকে তরুণের পরিবারের তরফে পুলিশকে জানানো হয়েছে, ঘটনার দিন অর্থাৎ ৭ অক্টোবর রাত ১টা ৩৮ মিনিটে দেবাঞ্জনের বান্ধবী তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন, ‘আমরা বেরোচ্ছি’! লেখাটি কারও কাছে কোনও সঙ্কেত ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। বৃহস্পতিবার নিমতা থানায় দেবাঞ্জনের বাবা অরুণবাবু মূলত পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তঁার কথায়, ‘‘পুলিশ কমিশনার নিজে তদন্তে হস্তক্ষেপ করায় খুবই সহযোগিতা পাচ্ছি।’’

অরুণবাবু তাঁর লিখিত অভিযোগে ঘটনার জন্য মূল দায়ী করেছেন ছেলের বান্ধবীর প্রাক্তন প্রেমিককে। এ ছাড়াও অভিযোগে ওই যুবকের দুই বন্ধু, বান্ধবী ও আর এক তরুণীর নাম রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ঘটনার দিন ভোর চারটে নাগাদ দেবাঞ্জনের বান্ধবীর প্রাক্তন প্রেমিক চিনার পার্কের বাবলাতলায় তার এক বন্ধুর ভাড়া করা ফ্ল্যাটে গিয়েছিল। কেন এত ভোরে ওই যুবক সেখানে গেল, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। ওই যুবকের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।

পাশাপাশি নিমতা স্কুল রোডে দুর্ঘটনার পরে যে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে গিয়েছিলেন, তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কারণ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন, ঘটনাস্থলে এসে তাঁরা দেখেন, গাড়ির পাশে তিন যুবক দাঁড়িয়ে। যাদের দু’জন একেবারেই অপরিচিত। পুলিশ আসার পরেই ওই দু’জন আচমকা বাইক নিয়ে উধাও হয়ে যান। দেবাঞ্জনের পরিবার মনে করছে, গোটা ঘটনার পিছনে তাঁর বান্ধবীর প্রেমিকের হাত রয়েছে। এ দিন দেবাঞ্জনের মা মধুমিতাদেবী বলেন, ‘‘ঘটনার ২০-২২ দিন আগেই ছেলেকে ওই যুবক হুমকি দিয়েছিল, ৯ এমএম পিস্তল দিয়ে গুলি করে মারবে। এমনকি ঘটনার পরে কেন বিষয়টা নিয়ে খোঁজখবর করা হচ্ছে, তার জন্য ছেলের বন্ধুদেরও সে হুমকি দিয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement