death

সারা রাত রাস্তায় পড়ে, মৃত্যু দুর্ঘটনায় আহত যুবকের

মৃতের নাম পাপ্পুকুমার যাদব (২৬)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৪৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

ফের অমানবিকতার নজিরের সাক্ষী থাকল কলকাতা। শনিবার রাতে একটি দুর্ঘটনায় আহত স্কুটারচালক রাস্তায় পড়ে রইলেন আট ঘণ্টা। স্কুটারের আরোহী এক কিশোরকে কেউ বা কারা হাসপাতালে নিয়ে গেলেও তাঁরা অন্য জনের খোঁজ করেননি। ওই কিশোর রবিবার সকালে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ঘটনাস্থলে ফিরে গিয়ে দেখে, সেখানেই অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন চালক। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। মৃতের নাম পাপ্পুকুমার যাদব (২৬)।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অনুপকুমার যাদব নামে ওই কিশোর জানিয়েছে, শনিবার সে তার জামাইবাবু পাপ্পুকুমারের সঙ্গে একটি কাজে বেরিয়েছিল। রাত এগারোটা নাগাদ প্রগতি ময়দান থানা এলাকার দুর্গাপুর বস্তি এলাকার বাড়িতে ফেরার সময়ে উল্টো দিক থেকে আসা একটি গাড়ি তাদের স্কুটারে ধাক্কা মেরে চলে যায়। বেশ কিছু ক্ষণ রাস্তায় পড়ে থাকার পরে অনুপকে একটি ডাম্পার তুলে নিয়ে গিয়ে এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু সেই ডাম্পারের লোকজন পাপ্পুকে নিয়ে যাননি। তখন অচৈতন্য অবস্থায় থাকায় অনুপও কিছু বলতে পারেনি। রবিবার সকালে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে জামাইবাবুর কথা পুলিশকে জানায় সে। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ ও পাপ্পুর পরিবার। দেখা যায়, তখনও সেখানেই পড়ে রয়েছেন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

ওই ডাম্পারের লোকজনের পাশাপাশি এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। দুর্ঘটনায় আহত এক ব্যক্তি রাস্তায় পড়ে থাকলেও তা পুলিশের চোখে পড়েনি। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, ওই রাস্তায় কি রাতে পুলিশের কোনও নজরদারি নেই? সেখানে পুলিশি টহলের ব্যবস্থা থাকলে ওই আহত যুবককে আগেই হাসপাতালে পাঠানো যেত। তা হলে পাপ্পু হয়তো প্রাণে বেঁচে যেতেন বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন তাঁর পরিবারের লোকজন।

Advertisement

এ প্রসঙ্গে প্রগতি ময়দান থানার ওসি চন্দন রায় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাতে যাঁরা গাড়ি করে ওই কিশোরকে ঘটনাস্থল থেকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁরা আমাদের খবর দেননি। রাতে পুলিশেরও অনেক কাজ থাকে। শনিবার রাতে আমাদের থানা এলাকায় আরও দুর্ঘটনা ঘটেছিল। সেখানে যেতে হয়েছিল।’’ তবে এই ঘটনায় পুলিশের যে দায় এড়াতে পারে না, তা স্বীকার করে চন্দনবাবু বলেন, ‘‘এই ঘটনায় পুলিশের দায় যে নেই সে কথা বলব না। কিন্তু দুঘর্টনার জায়গাটি গ্রামীণ এলাকায় পড়ে। রাতে অন্ধকার থাকে ওই এলাকা। মৃতদেহ দাহ করতে নিয়ে যাওয়া ছাড়া ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি যায় না। রাতে ওখান দিয়ে লোকের যাতায়াতও কম।’’ রাতের শহরে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ডিসি (পূর্ব) গৌরব লাল এবং ডিসি (ট্র্যাফিক) রূপেশকুমার— দু’জনকেই মেসেজ করা হলে উত্তর মেলেনি। ফোনও ধরেননি তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement