প্রতীকী ছবি।
মায়ানমার থেকে পাচার হওয়া সোনা ধরা পড়ল কলকাতায়। শনিবার বড়বাজার থেকে সওয়া দু’কোটি টাকার সোনা সমেত ধরা পড়েন এক মিজো যুবক। জানা গিয়েছে, মিজোরামের এক প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়কের ছেলে তিনি। তাঁকে রবিবার আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
ডিরেক্টরেট অব রেভেনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই) সূত্রে খবর, ধৃতের নাম লালমানগাইহা। বয়স ২৪ বছর। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, তিনি কয়েক বছর ধরে বেলেঘাটায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন। শনিবার বড়বাজারে ৪০টি ছোট সোনার বিস্কুট নিয়ে এসেছিলেন তিনি। সব মিলিয়ে তাঁর কাছে ৬ কিলোগ্রাম ৬৪ গ্রাম সোনা মেলে। কে তাঁকে ওই সোনা দিয়েছিলেন এবং কার হাতে তা তুলে দেওয়ার কথা ছিল, জানা যায়নি। আগেও বেশ কয়েক বার লালমানগাইহা এ ভাবে সোনা পাচার করেছেন বলে ডিআরআই অফিসারদের কাছে স্বীকার করেছেন।
ডিআরআই সূত্রে খবর, মায়ানমার থেকে মিজোরামের সীমান্ত পেরিয়ে জোখাতার এলাকা দিয়ে সোনা পাচার হচ্ছে। চলতি আর্থিক বছরে মায়ানমার ছাড়াও বাংলাদেশ ও ভুটান থেকে এ ভাবে পাচার হওয়া ২৭৩ কিলোগ্রাম সোনা পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর-পূর্ব ভারতে ডিআরআই অফিসারদের হাতে ধরা পড়েছে। ধরা পড়া সোনার বাজারদর প্রায় ৮১ কোটি টাকা।
এত ধরপাকড়ের পরেও পাচার অবশ্য কমেনি। গত ২৫ জানুয়ারি নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশন থেকে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে ডিআরআই। দু’জনেই উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়া জেলার বাসিন্দা এবং তাঁরাও মায়ানমার থেকে সড়কপথে পাচার হওয়া সোনা নিয়ে আসছিলেন কলকাতায়। তাঁদের দু’জনের ট্রলি ব্যাগের হ্যান্ডেলের ভিতরে লুকোনো অবস্থায় প্রায় চার কিলোগ্রাম সোনা পাওয়া যায়, যার বাজারদর এক কোটি ২৬ লক্ষ টাকা।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, কলেজের পড়া শেষ করেননি লালমানগাইহা। অনুমান, কলকাতা শহরেরই কোনও এক কলেজে কিছু দিন পড়াশোনার পরে তিনি ছেড়ে দেন। লালমানগাইহা নিজেই তদন্তকারীদের কাছে স্বীকার করেছেন, টাকার প্রয়োজনে তিনি সোনা পাচারের কাজে নামেন। প্রতি বার সোনা পাচারের জন্য গড়ে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে তিনি পেতেন। তা ছাড়াও মিলত যাতায়াতের খরচ। ডিআরআই কর্তাদের আশঙ্কা, এ ভাবে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার আইজল থেকে সোনা নিয়ে কলকাতায় এসেছেন এই যুবক।
কলকাতায় সোনার ব্যবসায়ীদের একটি অংশ নিয়মিত এই পাচার হওয়া সোনা কিনে গয়না প্রস্তুত করে বাজারে বিক্রি করছেন বলেও এই কেন্দ্রীয় শুল্ক গোয়েন্দা অফিসারদের সন্দেহ।