প্রতীকী ছবি
শুধু পুলিশে অভিযোগ জানিয়েই হাল ছাড়েননি তরুণী। বাগুইআটির একটি শপিং মলে তাঁর সঙ্গে অভব্যতা করার অভিযোগে যে ব্যক্তির ছবি তিনি মোবাইলে তুলেছিলেন, তাঁর গলায় ঝুলছিল একটি কার্ড। ওই কার্ডটি শার্টের আড়ালে থাকলেও তার ফিতের উপরে লেখা ছিল ‘এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল’।
গত বুধবার, ঘটনার দিন বাগুইআটি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরে ওই ‘এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল’ (এটিসি) লেখাটির সূত্র ধরেই ওই ব্যক্তির খোঁজ করতে শুরু করেন অভিযোগকারিণী। শেষে ইন্টারনেট থেকে কলকাতা বিমানবন্দরের এটিসি-র জেনারেল ম্যানেজার আর এস লাহোরিয়া-র ইমেল আইডি জোগাড় করেন তিনি। শুক্রবার ওই অভিযুক্ত অফিসারের ছবি-সহ জিএম-কে মেল করেন তরুণী। অভিযুক্তের পরিচয় জানতে চান তিনি। তরুণী জানান, তিনি অভিযুক্তের নাম-পরিচয় জানেন না। জানতে পারলে তদন্তে সাহায্য হবে।
তরুণীর অভিযোগ, সে দিন ওই শপিং মলে মায়ের সঙ্গে কেনাকাটা করছিলেন তিনি। সেই সময়ে ওই অভিযুক্ত ব্যক্তি তাঁদের পিছনে পিছনে ঘুরতে শুরু করেন। এক সময়ে তিনি তরুণীর ছবিও তুলতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। তা দেখতে পেয়ে তরুণীও পাল্টা ওই অফিসারের ছবি তুলে রাখেন। অভিযোগ, এর পরেই ওই তরুণীর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন ওই ব্যক্তি। টাকা জমা দেওয়ার লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার সময়ে তিনি তরুণীকে টেনে ফেলে দেন বলেও অভিযোগ।
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, যে অফিসারের ছবি তুলে ওই তরুণী পাঠিয়েছেন, তিনি ইতিমধ্যেই এটিসি অফিসারের পদ থেকে অবসর নিয়েছেন। এটিসি অফিসারদের সংগঠনের নেতা কৈলাসপতি মণ্ডল বলেন, ‘‘মেয়েটির এই হাল না-ছাড়া মনোভাব, সাহস ও বুদ্ধিমত্তাকে আমি কুর্নিশ করি। এ ভাবেই মেয়েদের উপরে নির্যাতন বন্ধ হবে। অন্যথায় নয়।’’ জিএম আর এস লাহোরিয়া বলেন, ‘‘ইমেল পেয়েছি। তার উত্তরও দেওয়া হবে। তবে ওই মেলে তরুণী নিজের কোনও যোগাযোগের নম্বর পাঠাননি।’’
ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি ওই অফিসারের বিরুদ্ধে? জিএম বলেন, ‘‘তিনি যে হেতু অবসর নিয়েছেন, তাই আমাদের আর কিছু করার নেই। যা করার পুলিশ করবে।’’ বাগুইআটি থানার বক্তব্য, ‘‘তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে তারা।’’