তালাবন্ধ ঘরে ‘আত্মহত্যার চেষ্টা’, অগ্নিদগ্ধ তরুণী

পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কড়েয়া থানা এলাকার চামরু খানসামা লেনের একটি ঝুপড়িতে। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই তরুণীকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশের ধারণা, এটি দুর্ঘটনা নয়। ওই তরুণী গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি নিজেই নাকি সে কথা জানিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৫২
Share:

প্রতীকী ছবি।

মেয়েকে ঘরে তালাবন্ধ করে কাজে গিয়েছিলেন মা। বেলায় কাজ থেকে ফিরে ঘরে ঢোকার আগে পড়শিদের সঙ্গে চা খাওয়ার সময়ে তিনি দেখলেন, ঘরের চাল ফুঁড়ে আগুনের শিখা বেরোচ্ছে। দরজা খুলে দেখা যায়, অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে ওই মহিলার মেয়ে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কড়েয়া থানা এলাকার চামরু খানসামা লেনের একটি ঝুপড়িতে। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই তরুণীকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশের ধারণা, এটি দুর্ঘটনা নয়। ওই তরুণী গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি নিজেই নাকি সে কথা জানিয়েছেন।

পুলিশ জেনেছে, গত অগস্ট মাসে বাবার মৃত্যুর পর থেকে মায়ের সঙ্গে ওই ঝুপড়িতেই ছিলেন তরুণী। মা পরিচারিকার কাজ করেন। প্রতিদিন সকালে কাজে যাওয়ার সময়ে মেয়েকে বাড়িতে তালাবন্ধ করে রেখে যেতেন তিনি।

Advertisement

পুলিশের কাছে মায়ের দাবি, মেয়ের মানসিক স্থিতি ঠিক ছিল না। অতীতে কয়েক বার কাউকে কিছু না বলেই ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেই কারণেই সম্প্রতি মেয়েকে ঘরে তালাবন্ধ করে রেখে কাজে যেতেন মা। শনিবারও তা-ই করেছিলেন। কাজ শেষ করে পাড়ায় ফিরে বাড়ির কাছে বসে চা খাচ্ছিলেন। ওই সময়েই তিনি দেখতে পান, ঘর থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে।

দগ্ধ তরুণীকে উদ্ধার করার পরে স্থানীয়েরাই আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। পরে দমকল পৌঁছয়। তত ক্ষণে অবশ্য আগুন আয়ত্তে এসে গিয়েছে। এলাকার এক বাসিন্দার গাড়িতে চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তরুণীকে। তদন্তকারীরা জানান, বছর কুড়ির ওই তরুণীর অবস্থা সঙ্কটজনক। পুলিশের দাবি, ওই তরুণী জানিয়েছেন, তিনি মানসিক যন্ত্রণার জেরে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

এ দিন পড়শিরা জানান, ওই তরুণী কিছু দিন স্থানীয় স্কুলে পড়েছেন। পরে পড়াশোনা ছেড়ে দেন। স্বামী মারা যাওয়ার পরে মা মেয়ের জন্য পাত্র খুঁজতে শুরু করেন। এক জন পাত্র ঠিকও হয়। তখন পাড়ার লোকজন মহিলাকে আশ্বাস দেন, তাঁরাই মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করে দেবেন। কিন্তু বিয়ের দিন পনেরো আগে ওই তরুণী বিয়ে করতে বেঁকে বসেন। কী কারণে তিনি বিয়েতে রাজি হচ্ছিলেন না, তা পড়শিদের অজানা।

এ দিন বস্তির ওই ঘরে গিয়ে দেখা যায়, যে ক’টি আসবাব ও জামাকাপড় ছিল, সবই পুড়ে গিয়েছে। লোহার খাটের তলায় পড়ে রয়েছে পানীয় জল ভর্তি কিছু প্লাস্টিকের বোতল। একচিলতে ঘরে পুড়ে গিয়েছে দরমার তিন দিকের দেওয়াল। পুড়ে গিয়েছে টিনের চালও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement