প্রতীকী ছবি।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রেড রোডে পুলিশি মহড়ার মধ্যে গাড়ি নিয়ে ঢোকার চেষ্টা করায় গ্রেফতার হলেন এক যুবক। যদিও গার্ডরেল থাকায় এবং পুলিশ সময়ে পদক্ষেপ করায় বড়সড় কোনও অঘটন ঘটেনি। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালের ওই ঘটনায় ধৃতের নাম অরিত্র সান্যাল। তাঁর বাড়ি বন্ডেল রোডে। উল্লেখ্য, বছর চারেক আগে প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে সেনাবাহিনীর মহড়া চলাকালীন এ ভাবেই গাড়ি নিয়ে তার মধ্যে ঢুকে পড়েছিল সাম্বিয়া সোহরাব নামে এক যুবক। সাম্বিয়ার গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ গিয়েছিল বায়ুসেনার কর্পোরাল অভিমন্যু গৌড়ের।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকাল পৌনে ৭টা নাগাদ মহড়া শুরুর আগে রেড রোড গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তার একটু পরেই খিদিরপুরের দিক থেকে বেপরোয়া গতিতে রেড রোডের দিকে ছুটে আসে একটি নীল রঙের সেডান গাড়ি। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা দূর থেকেই দেখতে পেয়ে গাড়িটিকে থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু চালক গাড়ি না থামিয়ে আরও এগিয়ে যান। রেড রোডে তখন জড়ো হয়েছেন প্রচুর পুলিশকর্মী। কারণ, একটু পরেই মহড়া শুরু হওয়ার কথা। গাড়ি নিয়ে জে কে আইল্যান্ডের কাছে এসে চালক দেখেন, সামনের রাস্তা গার্ডরেল দিয়ে ঘেরা। গাড়ির গতি খুব বেশি থাকায় থামাতে না-পেরে সোজা গার্ডরেলে ধাক্কা মারেন তিনি। এই ঘটনায় কারও কোনও চোট লাগেনি বলেই পুলিশ জানিয়েছে। এর পরেই ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশকর্মীরা ওই গাড়ি থেকে চালককে বার করে আনেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকেরও আঘাত লাগেনি। তবে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে ময়দান থানার পুলিশ। পরে জেরায় ওই যুবক পুলিশকে জানান, গাড়িটি তাঁর মা সুলগ্না সান্যালের। এ দিন সকালে তিনি ওই গাড়ি নিয়ে ফাঁকা রাস্তায় ঘুরতে বেরিয়েছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বছর উনিশের ওই যুবক ভুবনেশ্বরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিকতা নিয়ে পড়াশোনা করেন। কোভিডের কারণে সেই প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় গত কয়েক মাস ধরে তিনি কলকাতার বাড়িতেই রয়েছেন। মাস আটেক আগে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়েছেন তিনি। ওই যুবকের দাবি, রেড রোড যে মহড়ার জন্য বন্ধ থাকবে, তা তাঁর জানা ছিল না। তাই খিদিরপুরের দিক থেকে এসে তিনি রেড রোড ধরবেন বলেই গাড়ি ঘুরিয়েছিলেন।
এ দিন দুর্ঘটনার সময়ে ওই যুবকের গাড়ির গতি কত ছিল, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, গাড়ির গতি বেশি থাকাতেই ওই যুবক জে কে আইল্যান্ডের কাছে এসে গার্ডরেল দেখার পরে চেষ্টা করেও গাড়ি থামাতে পারেননি। আর তাতেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে গার্ডরেল থাকায় বড় অঘটন এড়ানো গিয়েছে।
২০১৬ সালের ১৩ জানুয়ারি একই ভাবে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি নিয়ে এসে দুর্ঘটনা ঘটিয়েছিলেন সাম্বিয়া সোহরাব। তৃণমূলের নেতা মহম্মদ সোহরাবের ছেলে সাম্বিয়া দুর্ঘটনার পরেই গাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিলেন। পরে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে পুলিশ সাম্বিয়াকে গ্রেফতার করলেও পরে আদালত থেকে বেকসুর খালাস পান তিনি। এ দিনের ঘটনায় অরিত্রের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৭৯ এবং ৪২৭ নম্বর ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এ দিন আদালতে তোলা হলে তিনি জামিন পেয়ে যান।