ছবি: সংগৃহীত
সকাল ১০টা ৪২।
কবি সুভাষমুখী ট্রেনটি ময়দান স্টেশনে ঢোকার মুখেই আচমকা ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে যায়। ভিতরে থাকা যাত্রীরা প্রবল ঝাঁকুনিতে একে অপরের গায়ে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। আর প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষমান যাত্রীরা দেখেন, এক তরুণীর হাত টেনে তাঁকে ধরে রাখার চেষ্টা করছেন এক জন বৃদ্ধ। তবে নিমেষের মধ্যেই বৃদ্ধের হাত ছাড়িয়ে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিলেন তরুণী। তিনি ঝাঁপ দেওয়ার আগেই ট্রেনটি দাঁড়িয়ে যাওয়ায় বড়সড় অঘটন এড়ানো গিয়েছে।
তরুণীকে লাইনে ঝাঁপাতে দেখেই ছুটে আসেন আরপিএফ কর্মীরা। স্ট্রেচার নিয়ে চলে আসেন মেট্রোকর্মীরাও। মেট্রো রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তরুণী দু’টি লাইনের মাঝে থাকা নর্দমার মধ্যে মুখ থুবড়ে পড়েছিলেন। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সন্ধ্যায় তরুণীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও মেট্রো রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তরুণী তাঁদের বলেছেন, তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতা এলাকার বাসিন্দা। নিজের ঠিকানা বা আর কিছু জানাননি তিনি। তবে নামটা জানিয়েছেন। এক প্রত্যক্ষদর্শী যাত্রী জানান, প্ল্যাটফর্মের মাঝখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন ওই তরুণী। ট্রেন আসার সময়ে আরপিএফ কর্মী বাঁশি বাজাতেই ধীরে ধীরে এগিয়ে যান তিনি। আচমকা এক বৃদ্ধ গিয়ে তাঁর হাত ধরে ফেলেন। তরুণীকে পিছন দিকে টেনে আনার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু ধাক্কা দিয়ে বৃদ্ধকে সরিয়ে ট্রেনের সামনে ঝাঁপিয়ে পড়েন ওই তরুণী। কিন্তু তত ক্ষণে ট্রেনটি ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে পড়েছে। তরুণীর ধাক্কায় প্ল্যাটফর্মের উপরে ছিটকে পড়েন বৃদ্ধ। রেল ও আরপিএফ কর্মীরা তাঁকে ধরে তুলে বসান। তাঁরা জানান, ওই তরুণীকে উদ্ধার করার ফাঁকেই বৃদ্ধ অন্য দিকের ট্রেন ধরে চলে যান। তাঁর আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। স্টেশন চত্বর-সহ আশপাশের এলাকায় তাঁর খোঁজ করা হলেও হদিস মেলেনি। বৃদ্ধ ওই তরুণীর পরিচিত কি না, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
মেট্রো রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃদ্ধ ওই তরুণীর হাত ধরে টানাটানি করছেন দেখেই ট্রেন থামিয়ে দিয়েছিলেন চালক। স্টেশনের সিসি টিভি ফুটেজ দেখে ওই বৃদ্ধকে শনাক্ত করা চেষ্টা হচ্ছে বলে মেট্রো রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।