সোহম মল্লিক এবং ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।
রাতের শহরে দুর্ঘটনার বলি তরুণ সাংবাদিক। নিহত সাংবাদিকের নাম সোহম মল্লিক। তাঁর সতীর্থ ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ গুরুতর জখম। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি তিনি। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে দক্ষিণ কলকাতার রাস্তা দিয়ে মোটরবাইকে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সোজা একটি গাছে ধাক্কা মারে মোটরবাইকটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সোহমের। গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ময়ূখকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ মোটরবাইকে যাচ্ছিলেন সোহম এবং ময়ূখ। লর্ডসের মোড়ের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে। বাইকসমেত রাস্তায় দু’জনকে পড়ে থাকতে থেকে, সেই সময় অনলাইন খাবার ডেলিভারি সংস্থা সুইগির কিছু কর্মী ছুটে আসেন। তাঁরাই দু’জনকে তুলে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে সোহমকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। তড়িঘড়ি সিসিইউ-তে নিয়ে যাওয়া হয় ময়ূখকে। পরে সেখান থেকে মল্লিকবাজারের নিউরো সায়েন্সে স্থানান্তরিত করা হয়। মাথায় গুরুতর চোট পেয়েছেন তিনি। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। ফোনে ময়ূখের এক সতীর্থ আনন্দবাজার ডিজিটালকে জানান, দুর্ঘটনায় ময়ূখের একটি চোখ মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চোখটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা।
ময়ূখের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে সোহম তাদের বাড়িতে আসেন। রাতে সেখানেই থাকার কথা ছিল তাঁর। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমনকল্যাণ লাহিড়ির বাড়ি যান তাঁরা। সেখান থেকে ফেরার পথেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুর্ঘটনার সময় সোহম বাইক চালাচ্ছিলেন বলে পুলিশকে দেওয়া বয়ানে জানিয়েছেন ময়ূখ। বাইকটি স্কিড করে গাছে ধাক্কা মারে বলে জানিয়েছেন তিনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে লেক থানার পুলিশ।
এক পেশার সুবাদেই সোহম এবং ময়ূখের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে বলে জানা গিয়েছে। কলকাতার সাংবাদিক মহলে দু’জনই অত্যন্ত পরিচিত নাম। তাঁরা একে অপরের কত ভাল বন্ধু, তা দু’জনের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট দেখলেও বোঝা যায়। সেখানে বেশিরভাগ ছবিতেই তাঁরা একসঙ্গে। কিছু দিন আগে রাজ্যের বাইরে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন ময়ূখ। কয়েক দিন আগেই কলকাতায় ফেরেন। তার পর বন্ধুর সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন। তার পরেই এই মর্মান্তিক ঘটনা।