প্রতীকী চিত্র।
সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে সোনারপুর-রাজপুর জলপ্রকল্পের কাজ চলতি বছরের শেষার্ধে সম্পূর্ণ হতে পারে। কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।
কেএমডিএ সংস্থা সূত্রের খবর, পানীয় জল পরিশোধন প্লান্টটি তৈরির কাজ প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে এসেছে। এখন গঙ্গা থেকে জল তুলে ১৮ কিলোমিটার বিস্তৃত পাইপলাইনের মাধ্যমে তা সোনারপুর-রাজপুর পরিশোধন প্লান্টে নিয়ে যাওয়ার কাজটুকু বাকি রয়েছে। প্রস্তাবিত পাইপলাইন বসানোর কাজ সম্পূর্ণ হলেই জল সরবরাহ শুরু করা যাবে বলে জানাচ্ছেন সংস্থার আধিকারিকদের একাংশ। সংস্থার এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘এটা অতি গুরুত্বপূর্ণ পানীয় জলপ্রকল্প। কারণ এই প্রকল্পের ফলে শুধু সোনারপুর-রাজপুরই নয়, বারুইপুর এমনকি কলকাতা পুর এলাকার একাংশেও জল সরবরাহ করা যাবে।’’
কিন্তু ওই জলপ্রকল্পের জন্য পাইপলাইন বসানোর আগেই তার গতিপথ (অ্যালাইনমেন্ট) নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশকর্মীদের একাংশ। কারণ, ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই পাইপলাইন আদিগঙ্গার পাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা আছে। কিন্তু পরিবেশকর্মীদের বক্তব্য, এমনিতেই জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশমতো যে ৭৭টি নিকাশি নালার মাধ্যমে তরল বর্জ্য আদিগঙ্গায় গিয়ে পড়ছে, তা বন্ধ করে পাইপলাইনের মাধ্যমে নিকাশি পরিশোধন প্লান্টে নিয়ে যাওয়ার কথা। এ বার সেই নিকাশি পাইপলাইনও আদিগঙ্গার দু’পাড়েই বসবে। এক পরিবেশকর্মীর কথায়, ‘‘যদি এক দিক দিয়ে জলের পাইপলাইন আর অন্য দিকে নিকাশির পাইপলাইন যেত, তা হলে কোনও সমস্যা হত না। কিন্তু ওখানে সমান্তরাল ভাবে একই সঙ্গে দু’টি পাইপলাইন কী ভাবে যেতে পারে, তা পরিষ্কার নয়।’’
পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের কথায়, ‘‘একেই জবরদখল হওয়ার ফলে আদিগঙ্গা এখন ধুঁকছে। তার উপরে জলের পাইপলাইন বসলে তা আদিগঙ্গাকে আরও সঙ্কীর্ণ করে দেবে বলেই আশঙ্কা করছি।’’
যদিও কেএমডিএ আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, একটা ‘চ্যানেল’ দিয়ে একাধিক পরিষেবামূলক তার, পাইপলাইন-সহ একাধিক জিনিস নিয়ে যাওয়া যেতেই পারে। তা ছাড়া, জলের পাইপলাইন বসানোর ক্ষেত্রে অন্য কোনও বিকল্প পথ খোলা নেই। কিন্তু তার জন্য আদিগঙ্গার জলের গতি যাতে কোনও ভাবেই অবরুদ্ধ না হয় বা সেখানে পরিবেশগত কোনও সমস্যা তৈরি না হয়, সেই বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘মাথায় রাখতে হবে যে, এটা বাণিজ্যিক কোনও প্রকল্প নয়। এটা পানীয় জলের প্রকল্প। এর ফলে জনসাধারণ উপকৃত হবেন। ফলে এটাকে সেই দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিচার করা উচিত।’’