ফাইল চিত্র।
সপ্তাহখানেক আগেই সন্তর্পণে ধস কবলিত বৌবাজার এলাকা পেরিয়েছিল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) ‘উর্বী’। এ বার পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের ওই টিবিএম পৌঁছে গিয়েছে বৌবাজার সংলগ্ন বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোকর্তাদের আশা, সব ঠিক থাকলে আগামী অগস্টের মাঝামাঝি সময়ে বাকি ৬৫০ মিটার পথ পাড়ি দিয়ে শিয়ালদহে পৌঁছে যেতে পারে ‘উর্বী’। স্বাধীনতা দিবসের কাছাকাছি সময়ে পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের কাজ শেষ করা গেলে তা বড় সাফল্য হবে বলে মত মেট্রোকর্তাদের একাংশের।
দীর্ঘ লকডাউনে কাজ বন্ধ থাকার পরে জুনের তৃতীয় সপ্তাহে ইস্ট-ওয়েস্টের সুড়ঙ্গের কাজ ফের শুরু হয়। আপাতত দিনে গড়ে ১৫ মিটার করে সুড়ঙ্গ খনন করা হচ্ছে। মাটির গুণগত বৈশিষ্ট্যের কারণে বৌবাজারের ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া মোড় পর্যন্ত
বাড়তি সতর্কতা নিতে হচ্ছে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে। ‘কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন লিমিটেড’ (কেএমআরসিএল) সূত্রের খবর, শিয়ালদহ পৌঁছতে এখনও প্রায় ৬৫০ মিটার সুড়ঙ্গ খনন করতে হবে। তার পরে ‘উর্বী’কে মাটি থেকে তুলে ফের পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গে বসিয়ে বাকি থাকা কাজ শেষ করা হবে। তখন টিবিএম বৌবাজারের দিকে এগিয়ে যাবে।
গত বছর ৩০ জুলাই বৌবাজারে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গে ধস নামায় কাজ বন্ধ করতে হয়। তার পরে এলাকায় ধস ঠেকানোর পাশাপাশি, বৌবাজারের মাটির ধস প্রবণতা কমিয়েছেন মেট্রোর প্রযুক্তিবিদেরা। এ জন্য সেখানের মাটির চরিত্র বিচার করে ‘কমপ্যাক্ট গ্রাউটিং’-এর (এই প্রক্রিয়ায় কংক্রিট, জল এবং একাধিক রাসায়নিকের মিশ্রণ পাইপের সাহায্যে মাটির ভিতরে প্রবেশ করানো হয়) সাহায্য নেওয়া হয়। পরে সাত মাস কাজ বন্ধ থাকার পরে গত ফেব্রুয়ারিতে ফের পূর্বমুখী সুড়ঙ্গে কাজ শুরু হয়েছিল। দুর্ঘটনাগ্রস্ত পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের টিবিএম ‘চণ্ডী’ অবশ্য এখনও বৌবাজারে মাটির নীচেই রয়েছে। পরে মাটি খুঁড়ে তাকে উদ্ধার করা হবে।
মেট্রোকর্তাদের মতে, গত বছর জুলাইয়ে বৌবাজারের বিপর্যয় অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা গিয়েছে। তবে সতর্কতার প্রশ্নে আপস করতে নারাজ তাঁরা। তাই আইআইটি মাদ্রাজ এবং হংকংয়ের বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে সতর্কতা মেনেই কাজ করা হচ্ছে।