একলা: পথে একাকী মেয়েদের জন্য এই শহর কি আদৌ সুরক্ষিত? সোমবার, ইএম বাইপাসের ধারে। ছবি: রণজিৎ নন্দী
হায়দরাবাদের কাছে তরুণী পশু-চিকিৎসককে গণধর্ষণ করে খুনের পরে এ রাজ্যের মেয়েদের পরস্পরের পাশে থাকার জন্য তৈরি হল হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুক-গ্রুপ।
ফেসবুকে তৈরি হওয়া গ্রুপটির নাম ‘উইমেন ফর উইমেন’। এর সঙ্গে তৈরি হয়েছে বেশ কিছু হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও। একা মহিলারা যখন যাতায়াত করবেন, তখন যাতে একের সঙ্গে অন্যের যোগাযোগ থাকে তার জন্যই এমন উদ্যোগ। এখনও পর্যন্ত তৈরি করা হয়েছে মোট ২০টি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। আর রবিবার ফেসবুকের গ্রুপটি তৈরি হওয়ার পরে ইতিমধ্যেই সেটির সদস্য সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে।
মানবাধিকার কর্মী সুমেধা দে সোমবার জানালেন, প্রথমে তিনি হোয়াটসঅ্যাপে তাঁর পরিচিতদের বিষয়টি জানান। এর পরে জানান ফেসবুকে। খুব ভাল সাড়া পান। পরিচিত এবং অপরিচিত মহিলারা এই উদ্যোগে যোগ দিতে এগিয়ে আসেন। দক্ষিণ শহরতলির বাসিন্দা সুমেধার কথায়, ‘‘আমরা যৌন নির্যাতন বন্ধ করতে পারব কি না, জানি না। কিন্তু নিজেরা যদি একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারি তা হলে বিপদের সময়ে অন্তত পরামর্শ তো পাব। প্রয়োজনে একে অন্যের কাছে চলেও যেতে পারব।’’ এই জন্য হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপগুলিকে নির্দিষ্ট অঞ্চলভিত্তিক হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে কলকাতা-সহ হাওড়া, বর্ধমান, ব্যান্ডেল, কাটোয়ার মহিলারা যাঁরা নিত্য একা যাতায়াত করেন, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়েছে তাঁদের জন্য।
সুমেধা জানালেন, বিষয়টি নিয়ে খুবই সাড়া পাচ্ছেন। এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপগুলির একটিতে রয়েছেন বৃষ্টি সেন বন্দ্যোপাধ্যায়। যাদবপুরের বাসিন্দা বৃষ্টি সুমেধার পূর্ব পরিচিত। এমন উদ্যোগে যোগ দিয়েছেন তিনিও। এ দিন বৃষ্টি বললেন, ‘‘প্রায় প্রতিদিনই একা যাতায়াত করতে হয়। বাড়ি ফিরতেও রাত হয়। এমন গ্রুপ হওয়ার ফলে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা সহজ হল।’’ বাঘা যতীনের সোমাশ্রী চৌধুরী এই উদ্যোগে শামিল হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘মেয়েরাই মেয়েদের জন্য এগিয়ে আসছে। এতে মেয়েরা একা চলাফেরা করতে আরও ভরসা পাবে।’’
হায়দারাবাদের ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন মিছিল করেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও মানবশৃঙ্খল এবং মিছিলে অংশ নেন।