প্রতীকী ছবি।
মেয়ের জন্য অনলাইনে ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হলেন এক শিক্ষিকা। যাদবপুরের বাসিন্দা অর্পিতা সরকার নামে ওই মহিলার অভিযোগ, প্রতারকেরা তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৪০ হাজারেরও বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সার্ভে পার্ক থানার পাশাপাশি লালবাজারেও অভিযোগ দায়ের করেছেন অর্পিতা। বিষয়টি লিখিত ভাবে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের শাখা-প্রধানকেও। অভিযোগকারিণীর কথায়, ‘‘ফাঁদে ফেলতে প্রতারকেরা বিভিন্ন কৌশল নেয় শুনেছি। কিন্তু ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে গিয়ে যে টাকা খোয়া যাবে, সেটা ভাবতে পারিনি।’’
কলকাতার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অর্পিতা যাদবপুরে বছর দশেকের মেয়েকে নিয়ে থাকেন। তাঁর স্বামী কর্মসূত্রে থাকেন আমদাবাদে। অর্পিতা জানান, তাঁর মেয়ের কয়েক দিন ধরে জ্বর ছিল। মঙ্গলবার জ্বর বাড়ায় তিনি চিকিৎসককে দেখানোর সিদ্ধান্ত নেন। সেই মতো অনলাইনে একটি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে কয়েক জন চিকিৎসকের চেম্বারের ফোন নম্বর পান তিনি। প্রথমে বাড়ির কাছের একটি চেম্বারে ফোন করেন। সেখান থেকে তাঁকে বলা হয়, ওই চিকিৎসক সে দিন রোগী দেখবেন কি না, তা সন্ধ্যায় জানিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু সন্ধ্যায় কিছু জানানো হয়নি। অভিযোগকারিণী তখন ওই নম্বরে আবার ফোন করায় তাঁকে বলা হয়, তিনি যে চিকিৎসকের কথা বলছেন, সে দিন তিনি দেখবেন না। তাঁর বদলে আর এক জন নামী শিশুরোগ চিকিৎসক চেম্বার করবেন।
অর্পিতা বলেন, ‘‘আমি ওই ডাক্তারের নাম আগে শুনেছি। তাই রাজি হয়ে যাই। চেম্বার থেকে বলা হয়, ডাক্তারের ফি ৬০০ টাকা পরে দিলেও হবে। আপাতত বুকিংয়ের জন্য ১০ টাকা দিতে হবে। এর জন্য একটি লিঙ্ক পাঠানো হচ্ছে।’’ তিনি জানান, ওই লিঙ্কে ক্লিক করে ১০ টাকা দেওয়ার পরেই তাঁর মোবাইলে এসএমএস আসে। তখন চেম্বার থেকে জানানো হয়, চিকিৎসকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট যে নিশ্চিত হয়েছে, তার জন্যই ওই এসএমএস। সেটি আবার চেম্বারের নম্বরেই পাঠাতে হবে। তা-ই করেন অর্পিতা।
অর্পিতা জানিয়েছেন, ফিরতি এসএমএস করতে গিয়েই তাঁর সন্দেহ হয়, তিনি প্রতারকদের কবলে পড়ছেন না তো? তত ক্ষণে অন্য প্রান্তে লাইন কেটে গিয়েছে। অর্পিতা বলেন, ‘‘ফোন করে ব্যাঙ্ককে বিষয়টি জানানোর আগেই দেখি, আমার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কাটা শুরু হয়েছে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই পাঁচ দফায় ৪৩৫০০ টাকা কেটে নেওয়া হয়।’’
সাইবার-বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘অচেনা লিঙ্কের মাধ্যমে টাকাপয়সা লেনদেন করা তো দূর, সেখানে ক্লিকও না করার জন্য আমরা বারংবার মানুষকে সতর্ক করছি।’’ অর্পিতা জানান, অচেনা লিঙ্কে ক্লিক করলে যে জালিয়াতি হতে পারে, সে কথা তিনি জানেন। কিন্তু সে দিন তাঁর মেয়েকে ডাক্তার দেখানো খুব জরুরি হয়ে পড়েছিল। প্রাথমিক ভাবে অ্যাপয়েন্টমেন্ট হয়ে যাবে ভেবেই তিনি ওই লিঙ্কে ক্লিক করেছিলেন।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।