বাসের চাকায় বাদ গেল হাত

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানেই বছর তিরিশের ওই মহিলার অস্ত্রোপচার হয়। ডান হাতে গুরুতর চোট পেয়েছিলেন তিনি। অস্ত্রোপচার করে সেই হাত বাদ দিতে হয়েছে। তবে তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩১
Share:

শাবানা আখতার।

মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে বাড়ি ফিরছিলেন মা। বাস থেকে নেমে রাস্তা পেরোনোর সময়ে পিছন থেকে বেপরোয়া গতিতে আসা আর একটি বাস ধাক্কা মারলে পড়ে যান তিনি। তাতেও থামেনি বাসটি। মহিলার হাতের উপর দিয়েই সেটি চলে যায় দুরন্ত গতিতে।

Advertisement

দু’টি বাসের রেষারেষিতে এমনই এক দুর্ঘটনায় হাত বাদ গেল কড়েয়ার বাসিন্দা ওই মহিলার।

পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ শেক্সপিয়র সরণি থানা এলাকার এ জে সি বসু রোডে ঘটে এই দুর্ঘটনা। শাবানা আখতার নামে ওই মহিলাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানেই বছর তিরিশের ওই মহিলার অস্ত্রোপচার হয়। ডান হাতে গুরুতর চোট পেয়েছিলেন তিনি। অস্ত্রোপচার করে সেই হাত বাদ দিতে হয়েছে। তবে তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল।

শনিবার শাবানার স্বামী সৈয়দ আলি এহসান জানান, তাঁদের মেয়ে ওয়াসিয়া একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের নার্সারির পড়ুয়া। শুক্রবার তাকেই স্কুলে পৌঁছতে গিয়েছিলেন শাবানা। সৈয়দের অভিযোগ, বাসের রেষারেষির জেরেই স্ত্রীর হাত বাদ গিয়েছে। তাঁর বক্তব্য, শাবানা নিয়ম মেনেই বাস থেকে নেমেছিলেন এবং রাস্তা পেরোচ্ছিলেন। কিন্তু পিছন থেকে বেপরোয়া গতিতে আসা বাসটি সামনের একটি বাসকে টপকাতে যায়। যার জেরেই ঘটে দুর্ঘটনা।

সৈয়দের কথায়, ‘‘অন্যের নিয়ম ভাঙার খেসারত দিতে হচ্ছে আমার পরিবারকে। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েকে কী ভাবে সামলাব, জানি না!’’ সৈয়দ জানান, শাবানার রোজগারের টাকাতেই তাঁদের পরিবার চলত। এখন কী ভাবে স্ত্রীর চিকিৎসা চলবে, সেটাই বুঝতে পারছেন না তিনি।

পুলিশ জানিয়েছে, কামারহাটি-আলিপুর রুটের সেই বাসটি আটক করা হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন চালক। ধৃতের নাম কেশব মাজি।

শহরের বিভিন্ন প্রান্তে পথ নিরাপত্তা বাড়াতে লাগাতার প্রচার চালাচ্ছে কলকাতা পুলিশ। পালন করা হচ্ছে পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ। কিন্তু তার পরেও কি হুঁশ ফিরছে না কারও, প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। বাসের রেষারেষি এবং বেপরোয়া গতির বলি হওয়ার ঘটনা ঘটেই চলেছে। মাস ছয়েক আগেও পথ দুর্ঘটনায় হাত বাদ যায় বাগুইআটির এক মহিলার। ফি দিন পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু কিংবা গুরুতর চোট পাওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে অভিযোগ অনেকেরই। লালবাজারের কর্তাদের মতে, সেই নিয়ম ভাঙতে হলে চালক ও পথচারী, দু’পক্ষেরই সচেতন হওয়া জরুরি। তাঁরা জানাচ্ছেন, পথ নিরাপত্তা নিয়ে প্রচার চলছে। তাতে কাজ হবেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement