রেখা সাউ।
দীপাবলির সন্ধ্যায় বাড়ির সকলে বেরিয়েছিলেন ঠাকুর দেখতে। কিন্তু বেশি দূর যাওয়া হল না। তার মধ্যেই ফোনে খবর এল, তাঁদের ঘর দাউ দাউ করে জ্বলছে। ছুটে এসে ওই পরিবারের লোকজন দেখলেন, ঘর তো পুড়েছেই। গুরুতর অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন পরিবারের এক সদস্যও। এর পরে দ্রুত খবর যায় থানায়। পুলিশের মারফত খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল। কোনওমতে আগুন নিভিয়ে উদ্ধার করা হয় এক মহিলাকে। তবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে কসবার ডক্টর জি এস বসু রোডে। মৃতার নাম রেখা সাউ (৪২)। স্বামী উমেশপ্রসাদ সাউ এবং তিন মেয়েকে নিয়ে দেওরের পরিবারের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকতেন তিনি। পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদের কারণে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই মহিলা। সেই আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায় ঘরও।
বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, পরিস্থিতি থমথমে। রেখাদের ঘর তালাবন্ধ। বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। রেখার মা বাসন্তী সাউ বললেন, ‘‘গত ১২ বছর ধরে মেয়ের মাথার সমস্যা। বহু চিকিৎসা করানো হয়েছিল। আগেও একাধিক বার মেয়ে এমন কাণ্ড ঘটানোর চেষ্টা করেছে। এ বার বাড়ি ফাঁকা থাকার সুযোগে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।’’
মৃতার দেওর শৈলেন্দ্র সাউ জানান, জানবাজারে তাঁদের দোকান রয়েছে। তিনি এবং দাদা উমেশ মঙ্গলবার বেলায় দোকানে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। সন্ধ্যায় রেখার তিন মেয়েকে নিয়ে ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলেন শৈলেন্দ্রর স্ত্রী। কিন্তু বাড়িতে এমন ঘটেছে শুনে ওঁরা মাঝপথ থেকে ফিরে আসেন। শৈলেন্দ্র বলেন, ‘‘বৌদির বহু চিকিৎসা করিয়েছিল দাদা। কিন্তু কিছুতেই অসুখ সারছিল না। পুলিশকে চিকিৎসার সব কাগজপত্র দেওয়া হয়েছে।’’ কসবা থানা সূত্রের খবর, মৃতদেহটি ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে বুধবার রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।