অবিচল: পার্ক স্ট্রিটের ভিড়ে পাহারায় ‘ওয়ারিয়র্স’-এর সদস্যেরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
‘উইনার্স’-এর পরে ‘ওয়ারিয়র্স’। উৎসবের শহরে বুলেট প্রুফ গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বা গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় দেখা মিলতে শুরু করেছে এ বার মহিলা কমব্যাট বাহিনীর। এত দিন রাজপথে টহল দিতে দেখা যেত শুধু পুরুষ বাহিনীকেই। বিশেষ দিনে বুলেট প্রুফ গাড়ি নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নজরদারি চালাবেন মহিলারাও। সশস্ত্র ওই প্রমীলা বাহিনীর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ওয়ারিয়র্স’। মঙ্গলবার থেকে বাহিনীর সদস্যদের ভিক্টোরিয়া, পার্ক স্ট্রিটের মতো জনবহুল এলাকায় ডিউটি করতে দেখা গিয়েছে।
লালবাজার সূত্রের খবর, বাহিনীর মোট সদস্য তিরিশ। রাজ্য পুলিশের বাহিনী থেকে মাস ছয়েক আগে ২০০ জনকে কলকাতা পুলিশে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে থেকে ওই ৩০ জন মহিলা কনস্টেবলকে দু’মাসের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি হয়েছে ওয়ারিয়র্স। বাহিনীর সদস্যদের পোশাকের রং ধূসর। কলকাতা পুলিশের কমব্যাট ব্যাটেলিয়নের অধীনে থাকবে এই বাহিনী। সদস্যেরা কুইক রেসপন্স টিমের হয়ে কাজ করবেন। যে কোনও ধরনের জরুরি অবস্থার মোকাবিলা করতে প্রস্তুত থাকবেন তাঁরা। ভিভিআইপিদের নিরাপত্তাতেও ব্যবহার করা হবে প্রমীলা বাহিনীর সদস্যদের। এ ছাড়া নাশকতা বা কোনও জঙ্গি কার্যকলাপের মতো ঘটনা শহরে ঘটলে ওই বাহিনীকে ব্যবহার
করা হবে। তবে প্রতিদিনের নিরাপত্তায় এই বিশেষ বাহিনীকে কাজে লাগানো হবে না বলেই জানিয়েছে লালবাজার।
পুলিশ সূত্রের খবর, দুর্গাপুজো, বড় রাজনৈতিক সমাবেশ, বড়দিন এবং বর্ষবরণের রাতের মতো বিশেষ দিনে অনেক সময়েই মহিলারা আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যায় পড়েন। উপস্থিত পুরুষ পুলিশকর্মীদের পক্ষে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না বহু ক্ষেত্রে। মহিলা কমব্যাট বাহিনী থাকলে সেই পরিস্থিতি দ্রুত সামাল দেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করেন লালবাজারের কর্তারা। তাই মূলত বড়দিন, বছর শেষের দিন কিংবা দুর্গাপুজো বা বড় সমাবেশ, যেখানে মহিলাদের উপস্থিতি থাকে চোখে পড়ার মতো তেমন জনবহুল এলাকায় থাকবে ওয়ারিয়র্স। সোমবার কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে গিয়ে বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা।
লালবাজার সূত্রের খবর, শহরের রাস্তায় মহিলাদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বছর দেড়েক আগে তৈরি হয়েছিল মহিলা মোটরবাইক বাহিনী, উইনার্স। শহরে রাস্তায়, স্কুল-কলেজের সামনে অথবা জনবহুল এলাকায় ইভটিজ়িং বা যৌন হেনস্থার ঘটনা আটকাতে ওই বাহিনী মাঝেমধ্যেই হানা দিচ্ছে। বাহিনীর সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে সম্প্রতি তার সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধিও করা হয়েছে।
বড়দিন উপলক্ষে শহরের জনবহুল জায়গায় ওই বাহিনী মোতায়েন করার পাশাপাশি মহিলাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জিপিএস-যুক্ত একাধিক গাড়িও রাস্তায় নামিয়েছে লালবাজার। সোমবার থেকেই জিপিএস ব্যবস্থা রয়েছে এমন ২৭টি গাড়ি এবং ৪০টি মোটরবাইক নামানো হয়েছে। ডেপুটি কমিশনারের অধীন ডিভিশনগুলির সঙ্গে লালবাজার কন্ট্রোল রুম থেকে ওই গাড়িগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।