অঙ্কন: তিয়াসা দাস
অপহরণের গল্প ফেঁদে এক যুবকের কাছ থেকে মোটা টাকা হাতানোর ফন্দি এঁটেছিল সে। তবে শেষরক্ষা হল না। বুধবার শিয়ালদহের একটি হোটেল থেকে তাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ওই হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অভিযোগকারীর স্ত্রীকেও। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম রাম পারভেজ ওরফে শেখ দিওয়ান।
পুলিশ জানিয়েছে, কড়েয়ার চমরু খানসামা লেনে মহম্মদ গুড্ডু নামে বছর তিরিশের এক অটোচালক থাকেন। তিনি রোজ সকালে অটো নিয়ে বেরিয়ে যান। ফেরেন রাতে তদন্তকারীদের গুড্ডু জানান, মঙ্গলবার দুপুরে স্ত্রীর মোবাইল থেকে ফোন পেয়ে তিনি হতবাক হয়ে যান। গুড্ডু পুলিশকে বলেন, ‘‘স্ত্রী ফোনে আমাকে জানান, বাড়িতে এক অপরিচিত ব্যক্তি এসে বলেছে, আমি নাকি অসুস্থ।’’ গুড্ডু স্ত্রীকে জানান, চিন্তার কোনও কারণ নেই। তিনি ঠিক আছেন। এর পরে মঙ্গলবার বিকেলে গুড্ডু বাড়ি ফিরে দেখেন, তাঁর স্ত্রী নেই। স্ত্রীকে ফোন করতে গিয়ে দেখেন, তাঁর মোবাইল ফোনও বন্ধ। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও স্ত্রীকে না পেয়ে চিন্তায় পড়েন তিনি।
মঙ্গলবার রাতেই গুড্ডুর মোবাইলে এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি ফোন করে জানান, তাঁর স্ত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে। মোটা টাকা না দিলে তাঁকে মেরে ফেলা হবে। এই ফোন পেয়েই গুড্ডু সেই রাতে কড়েয়া থানায় তাঁর স্ত্রীকে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। যে মোবাইল নম্বর থেকে ফোন আসে, সেটিও পুলিশকে দেন তিনি।
এর পরে লালবাজারের গোয়েন্দারা ওই নম্বরের সূত্র ধরে অভিযুক্ত যুবক-সহ গুড্ডুর স্ত্রীকে একটি হোটেল থেকে খুঁজে বার করেন। পুলিশ জানিয়েছে, গোটা ঘটনায় গুড্ডুর স্ত্রীরও ভূমিকা রয়েছে। তিনি আগেও এক বার একই ভাবে বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘যে হেতু অভিযোগকারী অপহরণের মামলা করেছেন, সে জন্য আমরা দিওয়ানকে গ্রেফতার করেছি। কিন্তু এক জন প্রাপ্তবয়স্কা নারী ও পুরুষের সম্পর্ক তৈরি হতেই পারে। এ ক্ষেত্রে অপহরণের মামলা কতটা ধোপে টিকবে, তা পুরোপুরি নির্ভর করছে আদালতে অভিযোগকারীর স্ত্রীর বয়ানের উপরে।’’