প্রতীকী ছবি
ভাড়া বাড়ানোর দাবি তুলেছেন ট্যাক্সির মালিকেরাও। যাত্রীদের প্রশ্ন, ভাড়া বাড়লে পরিষেবার মান বাড়বে কি? কারণ, যাত্রী প্রত্যাখ্যানের পাশাপাশি আরও একটি বড় অভিযোগ, এখনও শহরের কিছু জায়গায় চলছে ১৫ বছরের পুরনো হলুদ ট্যাক্সি।
অথচ ১৫ বছরের পুরনো বাণিজ্যিক গাড়ি বাতিলের জন্য ২০০২ সালে কলকাতা হাইকোর্টের গ্রিন বেঞ্চে মামলা করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। ২০০৭ সালে আদালত ওই গাড়ি বাতিলের নির্দেশ দেয়। ২০০৮ থেকে তা কার্যকর করে রাজ্য। সুভাষবাবু বলেন, ‘‘বাণিজ্যিক গাড়ি দৈনিক ২৫০-৩০০ কিলোমিটার চলে। তাতে গাড়ির আয়ু দ্রুত ক্ষয়ে জ্বালানি বেশি লাগে। এতে দূষণও বাড়ে।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১৮ সালেও রাজ্য পরিবহণ দফতর ১৫ বছরের পুরনো গাড়ি বাতিলের জন্য আদেশনামা জারি করেছিল। তাতে তেমন কাজ না হওয়ায় পরের বছর ফের ওই সব গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে রাজ্য। তবে শহরে এখনও ১৫ বছরের পুরনো অনেক ট্যাক্সি যে চলছে তা মানতে রাজি নন প্রশাসনের কর্তারা। এক পরিবহণ কর্তার কথায়, ‘‘১৫ বছরের পুরনো হলুদ ট্যাক্সি অনেক চলছে, এই তথ্য কী ভাবে বলা হচ্ছে জানা নেই। রাতে লুকিয়ে একটা-দু’টো চলতে পারে।’’
পরিবহণ আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, শহরের বিভিন্ন জায়গায় লাগানো ‘আরএসডি’-র (রিমোট সেন্সর ডিভাইস) মাধ্যমে গাড়ির দূষণ মাপা হয়। তখন ওই যন্ত্রেই গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বরের ছবি নথিভুক্ত হয়। তাতে এ ধরনের গাড়ির হদিস মেলে না বলেই দাবি তাঁদের।
যদিও অভিযোগ মানছেন ‘বেঙ্গল ট্যাক্সি চালক অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক বিমল গুহ। তিনি বলেন, ‘‘১৫ বছরের পুরনো গাড়ি হলেই সংগঠনের সদস্যপদ খারিজ হয়ে যায়। আমাদের সংগঠনের না হলেও, শহরে পুরনো হলুদ ট্যাক্সি চলছে।’’ অন্য দিকে, ‘প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সি মেনস ইউনিয়ন’-এর সভাপতি তথা রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের কথায়, ‘‘আমার সময়ে পুরনো গাড়ি বদলে নতুন গাড়ি নামানো শুরু হয়েছিল। ফলে ১৫ বছরের পুরনো হলুদ ট্যাক্সি বিলুপ্ত প্রায়।’’
শহরে যে ক’টি পুরনো হলুদ ট্যাক্সি চলছে, তার জন্য প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন বিমলবাবু। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ সক্রিয় হলে ওই সব গাড়ি রাস্তায় নামতেই পারত না।’’ পুলিশ ও পরিবহণের কর্তাদের দাবি, গাড়ি পরীক্ষার সময়ে ১৫ বছরের পুরনো বাণিজ্যিক গাড়ি দেখলে তা বাজেয়াপ্ত করা হয়।
আরও পড়ুন: ফের কঠোর লকডাউন হতে পারে রাজপুর-সোনারপুরে
পুরনো হলুদ ট্যাক্সি নিয়ে যাত্রী ও প্রশাসনের মত পার্থক্য থাকলেও মিল রয়েছে একটি বিষয়ে। ভাড়া বাড়লে বা অন্য সুবিধা পেলেও ট্যাক্সি পরিষেবার মান উন্নয়ন হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে প্রত্যেকে। কারণ, প্রশাসনের নির্দেশ সত্ত্বেও ট্যাক্সির যাত্রী প্রত্যাখ্যান ও বেশি ভাড়া নেওয়ার প্রবণতা লকডাউন শুরুর আগের মুহূর্তেও বহাল ছিল।