রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের অবশ্য দাবি, নিউ টাউন শহর পঞ্চায়েতের মধ্যে যাবে না। ফাইল চিত্র।
শহর নিউ টাউন কি শাসন করবেন গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধানেরা?
পঞ্চায়েত ভোটের আগে নিউ টাউনের বাসিন্দাদের অনেকের হাতে এসে পৌঁছনো সরকারি বিজ্ঞপ্তির প্রতিলিপি তেমনই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। জানা গিয়েছে, ১২টি বুথ ও আটটি আসনের মধ্যে বিভক্ত করে জ্যাংড়া-হাতিয়াড়া (২) নম্বর পঞ্চায়েতের অধীনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নিউ টাউন। ফলে এর পরে জল, রাস্তাঘাট, আলো, জন্মের শংসাপত্রের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পুর পরিষেবা নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনকেডিএ) দেবে না কি পঞ্চায়েত দফতর, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে।
সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, অ্যাকশন এরিয়া ১এ (উত্তর ভাগ), এনকেডিএ এলাকার অ্যাকশন এরিয়া ১বি, ২ ও ৩, ২বি, ২ই, ১সি, ১ডি-এর মতো এলাকাগুলি পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য নির্ধারিত ১২টি বুথে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, ওই সব অ্যাকশন এরিয়ার মাধ্যমে বহু ব্লক এলাকা পঞ্চায়েত বুথের অধীনে ঢুকে পড়েছে।
আবাসিকেরা জানান, নিউ টাউন গড়ে ওঠার পর থেকেই সেখানে পরিষেবা দেয় নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনকেডিএ)। সেখানে বিল্ডিং আইন, কর কাঠামো-সহ সবই পঞ্চায়েতের থেকে আলাদা। এমতাবস্থায় পঞ্চায়েতের মধ্যে ঢুকলে নিউ টাউনের শহর এলাকায় পরিষেবা দেওয়া হবে কী ভাবে, এমন নানা প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে নিউ টাউনে।
উল্লেখ্য, শহর নিউ টাউনের অতি অল্প সংখ্যক বাসিন্দাকে নিয়ে দু’টি বুথ জ্যাংড়া-হাতিয়াড়া (২) নম্বর পঞ্চায়েতের অধীনে আগেও ছিল। যার ফলে নিউ টাউন শহরের সামান্য কিছু অংশ ছিল পঞ্চায়েতের। এ বার বর্ধিত জনসংখ্যা ধরে সেই বুথের সংখ্যাই ১২ হয়েছে। রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের অবশ্য দাবি, নিউ টাউন শহর পঞ্চায়েতের মধ্যে যাবে না। তিনি বলেন, ‘‘পুনর্বিন্যাসের পরে হয়তো বুথের সংখ্যা বাড়ছে। তবে নিউ টাউন শহরের পরিষেবা দেবে এনকেডিএ।’’
বিরোধীরা অবশ্য জানাচ্ছেন, বর্তমানে শহর নিউ টাউনে ১৩ হাজারের কিছু বেশি মানুষের বসবাস। নির্বাচিত প্রার্থীরা পরিষেবা কাদের মাধ্যমে দেবেন, তা নিয়ে তাঁরা ধোঁয়াশায়। নিউ টাউনের সিপিএম নেতা সপ্তর্ষি দেবের কথায়, ‘‘যে বিজ্ঞপ্তি হাতে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, হিডকো অধিগৃহীত মোট এলাকা ভাগ হচ্ছে পঞ্চায়েতের এই ১২টি বুথের অধীনে। আমরাও চাই, একটা পুর পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা হোক। আমরা নির্বাচনে অংশ নেব। তবে শহরের প্রয়োজনীয় পুর পরিষেবা পঞ্চায়েত কতটা দিতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।’’
বিজেপির তরফে ভাস্কর রায় বলেন, ‘‘দু’দিন আগেই এই বিজ্ঞপ্তি হাতে পেয়েছি। আমরাও লড়ব। তবে শহরের সব কিছু যতটা নিয়ম মেনে হয়, পঞ্চায়েতের অধীনে তা হয় না। জানি না, এর পিছনে সরকারের অন্য দুরভিসন্ধি রয়েছে কি না।’’