ঘোড়াটিকে এক হোটেলে বিয়ের অনুষ্ঠানে খাটানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। প্রতীকী ছবি
সামনের দু’পায়ে গভীর ক্ষত। রক্ত ঝরছে। ক্ষত রয়েছে পিছনের পায়েও। কোনও ভাবেই ওই দুই পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াতে পারছে না সে। মাঝেমধ্যেই ছটফট করছে দড়ি ধরে থাকা ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য! এমনই একটি ঘোড়াকে জোর করে ইএম বাইপাসের ধারের এক হোটেলে বিয়ের অনুষ্ঠানে খাটানো হচ্ছে বলে লিখিত অভিযোগ দায়ের হল প্রগতি ময়দান থানায়। মামলা রুজু করার পরে পুলিশ ওই ঘোড়ার মালিককে থানায় ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। যদিও অভিযোগ দায়ের করা পশু অধিকার রক্ষা সংগঠনের দাবি, গত শুক্রবার অভিযোগ দায়ের করা হলেও এখনও ঘোড়ার মালিকের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকি, ঘোড়াটিকে মালিকের থেকে দূরে রাখার ব্যবস্থাও করা হয়নি। ওই সংগঠনের অন্যতম সদস্য রাধিকা বসু বললেন, ‘‘আহত, খেতে না পাওয়া ঘোড়াকে বিয়ের অনুষ্ঠানে কাজে লাগানো হচ্ছে। অত্যন্ত অমানবিক তো বটেই, এটা অপরাধ। পুলিশ-প্রশাসনের এ ব্যাপারে আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।’’
জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত গত ১৬ ফেব্রুয়ারি। কর্মসূত্রে ইএম বাইপাসের ওই হোটেলে গিয়েছিলেন রিকি চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, সেখানেই তিনি ওই আহত ঘোড়াটিকে ধুঁকতে দেখেন। এর পরে কাছে গিয়ে লক্ষ করেন, ঘোড়াটির সামনের দু’টি পায়ে গভীর ক্ষত। আঘাতের চিহ্ন রয়েছে পিছনের একটি পায়েও। তাঁর দাবি, ‘‘ঘোড়ার দড়ি ধরে যিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন, তিনি দাবি করেন, কয়েক দিন আগেই রাস্তায় গাড়ির ধাক্কায় আহত হয়েছিল ঘোড়াটি। তার পরে তার শুশ্রূষা করা হয়েছে। কিন্তু সে সম্পূর্ণ সেরে ওঠার আগেই তাকে বিয়ের কাজে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই ঘোড়ার মালিক তো বটেই, এমন ঘোড়া যাঁরা ভাড়া নেন, তাঁরাও যথেষ্ট অমানবিক। শুনলাম, বর চড়বে! অথচ, ওই দিন দুপুর ২টো থেকে জল-খাবার কিছু না দিয়েই ঘোড়াটিকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল।’’
ঘোড়াটির মালিক, রাজাবাজারের বাসিন্দা মহম্মদ নাদিমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এ ভাবেই আমাদের কাজ হয়। লকডাউনের পরে এমনিতেই রোজগার কমে গিয়েছে। চাইলেও বেশি ভাল ভাবে ঘোড়াকে রাখার উপায় নেই।’’