বহিরাগত বাহিনীর জোরেই কি এ বারও ভোট হবে বিধাননগরে? ফাইল চিত্র।
বহিরাগত বাহিনীর জোরেই কি এ বারও ভোট হবে বিধাননগরে? প্রচারে তো বটেই, প্রার্থীর মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিনেও বিধাননগরে বহিরাগতদের ভিড় দেখে এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ২০১৫ সালের পুরভোটের স্মৃতি উস্কে অনেকে বলছেন, ‘‘মনোনয়নেই যারা চলে এসেছে, তারা ভোটের দিন আসবে না? মনোনয়ন শেষে কেউ ফিরেছে কি? এরাই দাঁড়িয়ে ভোট করালে গত পুরভোটের দৃশ্যই ফিরবে!’’
পুলিশের যদিও দাবি, বহিরাগতের প্রবেশ আটকাতে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই বিধাননগরের ২১টি জায়গায় কড়া নাকা-তল্লাশি শুরু হয়েছে। মূলত ভাঙড়-রাজারহাট সংযোগস্থল, সুকান্তনগর, কুলিপাড়া, দত্তাবাদের মতো এলাকাগুলিতে বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে। তবে ভুক্তভোগীরা জানাচ্ছেন, ২০১৫ সালের ভোটের আগে এমন আশ্বাস মিললেও ভোটের দিন দেখা গিয়েছিল, সবই হচ্ছে বহিরাগত বাহিনীর ইচ্ছে মতো।
অনেকের দাবি, সে বার ভোট করাতে লোক এসেছিল হাওড়া, খিদিরপুর, চেতলা, ভাঙড়, বসিরহাট, বেলগাছিয়া, লেক টাউন, দমদম, দক্ষিণদাঁড়ি থেকে। বেশি গোলমাল হয় সল্টলেকের এবি, এসি পার্ক, এফডি, এফসি, ইই ব্লকে।
অভিযোগ, বাগুইআটির সাহাপাড়ার দিক থেকে এক শ্রমিক নেত্রীর অধীনে থাকা বহিরাগত বাহিনীর তাণ্ডবে লুকিয়ে পড়তে হয় ওই নেত্রীর দলের প্রার্থীকেই! মারধরের সময়ে বহিরাগতেরা নিজেদের প্রার্থীকেও চিনতে পারেনি। আক্রান্ত হন সংবাদমাধ্যমের অন্তত ২২ জন কর্মী। ভুক্তভোগীদের দাবি, বহিরাগতের দাপটে ভোটারদের অনেকেই বুথে যেতে পারেননি। বাগুইআটির সাহাপাড়ার একটি বুথে পুনর্নির্বাচনও হয়। এক প্রত্যক্ষদর্শীর মন্তব্য, ‘‘যেন কিছু নেতা-দাদা এলাকা ভাগ করে নিয়েছিলেন। প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রার্থীকে জেতাতেই হবে! প্রতি ওয়ার্ডের জন্য বহিরাগতদের এনে একাধিক দলে ভাগ করা হয়েছিল।’’
এ বারও প্রার্থীর মনোনয়ন জমার দিনে ব্যারাকপুর, পানিহাটি, ভাঙড়, বেলগাছিয়া, হাওড়া থেকে লোক এসেছিল বলে অভিযোগ। এর বেশির ভাগই বিধাননগরের নেতা-দাদাদের ব্যক্তিগত ক্ষমতার প্রদর্শন বলে দাবি। ভোটের দিন ওই বাহিনীর নিজেদের মধ্যে লড়াই বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা। অনেকেই বলছেন, দল ছেড়ে যাওয়া বিধাননগরের এক নেতা দলে ফিরে এই ভোটে পুরনো দাপট প্রমাণের চেষ্টা করতে পারেন। সেখানেই সংঘাতের বাতাবরণ তৈরি হতে পারে দলের পুরনো ‘শত্রুর’ সঙ্গে।
তৃণমূল প্রার্থী তথা বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত বললেন, ‘‘দল ছাড়ার বিষয়টি এখন আর ইসু নেই। আগের বার কিছু লোক ঝামেলা পাকিয়েছিল, এ বার তেমন কিছু হবে বলে মনে হয় না।’’ বিধাননগরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী সুজিত বসু বললেন, ‘‘২০১৫ সালে বিক্ষিপ্ত গন্ডগোল হয়েছিল। তার পর থেকে সব ভোটই শান্তিপূর্ণ হয়েছে। এ বার চেষ্টা করেও কেউ গন্ডগোল পাকাতে পারবে না।’’