—প্রতীকী ছবি।
প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে বেলচা দিয়ে মেরে খুন করেছিল স্ত্রী। তিন বছর আগের সেই নৃশংস ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন মৃতের বৃদ্ধা মা। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয়েছিল অভিযুক্ত স্ত্রী ও তার প্রেমিককে। গত তিন বছর ধরে চলা সেই চাঞ্চল্যকর খুনের মামলায় বুধবার দোষী সাব্যস্ত হওয়া শর্মিষ্ঠা নাথ ও তার প্রেমিক রাজীব মণ্ডলকে যাবজ্জীবন সাজা দিলেন হাওড়া জেলা ও দায়রা বিচারক শম্পা দত্ত পাল। সেই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাস জেলের সাজা ঘোষণা করেছে আদালত।
আদালত সূত্রের খবর, ব্যাঁটরা থানা এলাকার নটবর পাল রোডের বাসিন্দা রতন নাথ (৪৫) ওরফে বুড়োর বাড়িতে পাঁচটি কুকুর ছিল। সেই কুকুরগুলিকে দেখাশোনা করত বছর পঁচিশের রাজীব ওরফে রাজু। সেই সূত্রে রাজুর সঙ্গে প্রায় দু’বছর ধরে রতনের স্ত্রী শর্মিষ্ঠার বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু বিষয়টি প্রথমে রতনের বৃদ্ধা মা মালতি নাথ এবং পরে রতন জেনে যান। ফলে সংসারে অশান্তি শুরু হয়। তার পরেই রতনকে সরাতে খুনের ছক কষে শর্মিষ্ঠা-রাজু। বছর কুড়ি আগে বিয়ে হয়েছিল রতন-শর্মিষ্ঠার। তাঁদের একটি ১৫ বছরের নাবালিকা মেয়েও রয়েছে।
হাওড়া জেলার মুখ্য সরকারি আইনজীবী সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ২০১৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ২টো নাগাদ রতন যখন বাড়ি সংলগ্ন গ্যারাজে কাজ শেষ করে ঘরে ঢোকেন, তখনই তাঁকে জাপটে ধরে শর্মিষ্ঠা, আর সে সময়ে একটি বেলচা দিয়ে রতনকে মারতে মারতে খুন করে রাজু। রতনের চিৎকার শুনে তাঁর মা পাশের ঘর থেকে বেরিয়ে এসে ঘটনাটি দেখে ফেলায় তাঁকেও খুনের হুমকি দেয় শর্মিষ্ঠা। ঘটনার পরের দিন ব্যাঁটরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মালতিদেবী।
পুলিশ খুনের অভিযোগে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। জেরায় দু’জনেই খুনের কথা স্বীকার করে।
সোমনাথবাবু জানান, সরকার পক্ষের হয়ে তিনি মামলাটি পরিচালনা করেন। বিচার চলাকালীন আদালত ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে। এ দিন আদালতে দোষীদের সাজা ঘোষণার পরে মালতিদেবী বলেন, “ওরা দু’জনে মিলে আমার চোখের সামনে ছেলেটাকে নৃশংস ভাবে মেরে ফেলেছিল। তিন বছর ধরে বিচারের আশায় আদালতে ঘুরেছি। অবশেষে ওদের শাস্তি হওয়ায় আমরা খুশি।’’