—প্রতীকী ছবি।
দীর্ঘ ছুটি নেওয়াকে কেন্দ্র করে ঝামেলার জেরেই কি আত্মঘাতী হয়েছিলেন পুলিশকর্মী? পর্ণশ্রীর একটি আবাসনে পুলিশকর্মীর আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় এই তত্ত্বই জোরালো হচ্ছে। এমনকি, স্ত্রীকে খুন করে তাঁর আত্মঘাতী হওয়ার পরিকল্পনা ছিল বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করেছে। সেখানে ডিউটি এবং ছুটি নিয়ে দ্বিচারিতার অভিযোগ রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। লালবাজারের তরফে ওই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতেই কলকাতার নগরপাল নিজে আধিকারিকদের
কাছে খোঁজখবর করে এটা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে পর্ণশ্রীর গোপাল মিশ্র রোডের ওই আবাসনের ভাড়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় পুলক ব্যাপারি (৩৫) নামে এক পুলিশকর্মীর দেহ। নিজের সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি চালিয়ে ওই পুলিশকর্মী আত্মঘাতী হয়েছেন বলে জানা যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
তদন্তে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার অফিস থেকে সার্ভিস রিভলভার তুলে ডিউটির শেষে সেটি জমা না দিয়েই বাড়ি চলে গিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের প্রথম ব্যাটালিয়নের কনস্টেবল ওই পুলিশকর্মী। বিষয়টি নজরে আসতেই তাঁর দফতর ‘ওয়্যারলেস’ বিভাগের একটি দল পুলকের ফ্ল্যাটে পৌঁছয়। কিন্তু তার আগেই আত্মঘাতী হন তিনি।
জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা হলেও পর্ণশ্রীতে স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন ওই পুলিশকর্মী। প্রায় দু’বছর আগে আবাসনে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন তিনি। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত ৮ ডিসেম্বর ছুটি নিয়েছিলেন পুলক। ১২ ডিসেম্বর কাজে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও ২৯ জানুয়ারি, সোমবার কাজে যোগ দেন তিনি। চার দিনের ছুটি নিয়ে কেন পুলক এত দিন বাড়িতে থাকলেন, খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, ওই কনস্টেবলের কয়েক লক্ষ টাকা দেনা ছিল বাজারে। সুইসাইড নোটে সেই দেনা শোধ করে দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, পর্ণশ্রীর ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটে ডিউটি এবং ছুটি নিয়ে দ্বিচারিতার অভিযোগ করেছেন পুলক। সেখানে একাধিক জনের নাম রয়েছে বলেও খবরে প্রকাশ। এই সুইসাইড নোটে যে সব অভিযোগ করা হয়েছে, তা-ও খতিয়ে দেখছে লালবাজার।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, সাংসারিক বিষয় নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি ছিল ওই পুলিশকর্মীর। সেই কারণেই তিনি স্ত্রীকে খুনেরও পরিকল্পনা করেন বলে মনে করছে পুলিশ। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সুইসাইড নোটে যাঁদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁদের সঙ্গে কথা বলা হবে। ওই পুলিশকর্মী কেন এত টাকা ধার করলেন, তা-ও দেখা হচ্ছে।’’