ব্যাটারিচালিত হুইলচেয়ার নিয়ে অভিষেক। শুক্রবার, এসএসকেএমে। নিজস্ব চিত্র।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় আক্রান্ত অনেকেই ব্যবহার করেন হুইলচেয়ার। তার ইচ্ছেমতো ব্যবহার কখনওই বিজ্ঞানসম্মত নয়। শারীরিক অক্ষমতা আছে, এমন প্রতিটি রোগীর জন্য রয়েছে পৃথক হুইলচেয়ার। শুক্রবার এসএসকেএমের ফিজ়িক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন (পিএমআর) বিভাগের আলোচনায় উঠে এল সেই বিষয়টিই। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, উপযুক্ত হুইলচেয়ার ব্যবহার নিয়ে এখনও সচেতনতার অভাব রয়েছে।
এসএসকেএমের অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিভিন্ন ধরনের হুইলচেয়ার এখন এসেছে। যাঁর যেটা দরকার, তাঁকে যাতে সেটাই দেওয়া যায়, তার জন্য চিকিৎসক, প্যারামেডিক্যাল কর্মী, সকলেরই সচেতন হওয়া প্রয়োজন।’’ চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, হুইলচেয়ার প্রদান অনুষ্ঠানে যাঁদের সেটি দেওয়া হয়, তাঁদের কার কী প্রয়োজনীয়তা, তা পরীক্ষা না করলে দেওয়ার গুরুত্ব থাকে না। যেমন, স্ট্রোকে বা পক্ষাঘাতে আক্রান্ত রোগীকে যে হুইলচেয়ার দেওয়া হবে, তা পা বাদ যাওয়া রোগীর উপযুক্ত নয়। হুইলচেয়ারের যন্ত্রাংশের মাপ সংশ্লিষ্ট রোগীর দেহের বিভিন্ন অংশের মাপ অনুযায়ী হওয়াও জরুরি। এ দিন প্রতিটি হুইলচেয়ারের ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণের নির্দিষ্ট নিয়ম-সহ বিভিন্ন দিকও আলোচনায় তুলে ধরেন পিএমআরের শিক্ষক-চিকিৎসক বসুন্ধরা ঘোষাল।
২০১৭ সালে স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে শিরদাঁড়ায় চোট পেয়ে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী হন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। এখন সুস্থ হলেও হুইলচেয়ার লাগে তাঁর। ভবানীপুর থেকে প্রতিদিন ভাড়ার গাড়িতে হুইলচেয়ার তুলে রুবি পার্কের স্কুলে যান রসায়নের ওই শিক্ষক। এ দিন তাঁকে দেওয়া হয় ব্যাটারিচালিত হুইলচেয়ার। যেটি মোটরবাইকের মতো কাজ করবে। লুকিং গ্লাস, হ্যান্ডল, ব্রেক, হর্ন, আলো রয়েছে তাতে। ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার গতিবেগে চলবে। বাইকের মতো দেখতে অংশটি খুলেও নিতে পারবেন অভিষেক। পিএমআরের বিভাগীয় প্রধান রাজেশ প্রামাণিকের কথায়, ‘‘হুইলচেয়ার করে কোনও রোগী আর পাঁচ জনের মতোই যে দিকে খুশি যেতে পারেন। প্রত্যেকের পেশাগত জীবন আলাদা। কার কী ধরনের হুইলচেয়ার প্রয়োজন, সেটা বিশ্লেষণ করা জরুরি।’’
সে সব দেখেই অভিষেকের জন্য এমন হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়েছে, জানাচ্ছেন রাজেশ। এ বার হুইলচেয়ার নিয়ে স্কুলে যাওয়ার অপেক্ষায় অভিষেক।