চঞ্চল লাহিড়ী
জাদু দেখাতে গিয়ে গঙ্গায় তলিয়ে মৃত্যুর ঘটনায় ব্যাঙ্কশাল আদালতে চার্জশিট পেশ করতে চলেছে উত্তর বন্দর থানার পুলিশ। গত বছরের ১৬ জুন সোনারপুরের বাসিন্দা, জাদুকর চঞ্চল লাহিড়ী হাত-পা বাঁধা অবস্থায় গঙ্গায় ‘স্টান্ট’ দেখাতে গিয়ে তলিয়ে যান। ওই ঘটনায় ‘ম্যাজিক-শো’-র চার আয়োজকের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করবে পুলিশ। চলতি মাসেই আদালতে চার্জশিট পেশ হতে পারে বলে লালবাজার সূত্রের খবর।
কী বলা হয়েছে চার্জশিটে? পুলিশের একটি সূত্র জানায়, চার্জশিটে বলা হয়েছে, অনুমতি নেওয়ার সময়ে গঙ্গার উপরে নৌকা বা লঞ্চে জাদু দেখানোর আয়োজনের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু আদতে যে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় চঞ্চলবাবুকে জলে ফেলে দিয়ে ম্যাজিক দেখানোর হবে, তা উত্তর বন্দর থানার পুলিশ বা রিভার ট্র্যাফিককে জানানো হয়নি। ওই খেলা দেখাতে চঞ্চলবাবুরা ঘটনার দিন দুপুরে ক্রেন এবং দু’টি লঞ্চ নিয়ে জাজেস ঘাট থেকে মাঝগঙ্গায় পৌঁছন।
তদন্তকারীরা জানান, জাদুর খেলা দেখাতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় চঞ্চলবাবুকে ক্রেনে করে হাওড়া সেতুর নীচে মাঝগঙ্গায় ফেলে দেন তাঁরই সহকারীরা। জলের মধ্যে হাত-পায়ের বাঁধন খুলে চঞ্চলবাবুর উপরে উঠে আসার কথা ছিল। কিন্তু তিনি গঙ্গার জলে পড়ার পরেই প্রবল স্রোতে তলিয়ে যান। তাঁকে যে গঙ্গায় ফেলে দেওয়া হবে, সেই তথ্য পুলিশকে জানানো হয়নি।
কলকাতা পুলিশের কর্তারা ঘটনার পরে জানিয়েছিলেন, চঞ্চলবাবু লঞ্চে খেলা দেখাবেন বলে অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। জলে নামার কোনও অনুমতি তাঁর ছিল না। এমনকি, নিজস্ব ডুবুরি-সহ অন্য কোনও ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থাই ওই জাদুকরের সঙ্গে ছিল না। এই সব ব্যবস্থা রাখার শর্তেই কলকাতা পুলিশ তাঁকে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ দিয়েছিল। সেই কারণে যে আয়োজক সংস্থা ওই ‘স্টান্ট’ দেখানোর ব্যবস্থা করেছিল, সেই সংস্থার চার সদস্যের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হচ্ছে। রুদ্রপ্রসাদ লাহিড়ী, ভবেশ বারিক, সঞ্জীব সমাদ্দার এবং বীরেশ্বর রায় নামে ওই চার জনের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ওই চার জনের বিরুদ্ধে ঘটনার পরেই এফআইআর দায়ের হয়েছিল। তার জেরে চার জনই আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছিলেন।