বেসরকারি অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলির মান নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই বিস্তর অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। এ বার সরকার নিজেই অ্যাপ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করল। প্রতীকী ছবি।
বেসরকারি অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলির যাত্রী-পরিষেবার মান নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই বিস্তর অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। সংস্থাগুলিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে নির্দেশিকা জারি করেও সে ভাবে ফল মেলেনি। এ বার অভিযোগ খতিয়ে দেখে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়াও বেসরকারি সংস্থার আধিপত্য খর্ব করতে সরকার নিজেই অ্যাপ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করল। শনিবার পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী ও দফতরের সচিব সৌমিত্র মোহনের সামনে এই পরিকল্পনার রূপরেখা তুলে ধরেন তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের সচিব রাজীব কুমার।
প্রাথমিক ভাবে হলুদ ট্যাক্সির চালকদের একাংশকে এই ব্যবস্থার আওতায় এনে অন্তত মাস তিনেক এ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর কথা ভাবা হয়েছে বলে জানান পরিবহণমন্ত্রী। হাওড়া স্টেশন এবং বিমানবন্দরে প্রিপেড বুথের সঙ্গে যুক্ত ট্যাক্সিচালকদের একাংশকে বেছে নেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর। পুরো পরিকল্পনাটির একাধিক পর্যায় রয়েছে। সেই সব পর্যায় নির্ভুল ভাবে অতিক্রম করে অ্যাপ তৈরি করার বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। সে কথা মাথায় রেখেই পাইলট প্রকল্পেরসফল প্রয়োগের উপরে আগে জোর দেওয়া হচ্ছে। সরকারি অ্যাপে চালকদের ভাড়ার উপরে কমিশন ধার্য না করে নির্দিষ্ট সংখ্যক ট্রিপের উপরে সামান্য অঙ্কের টাকা পরিষেবা সংক্রান্ত খরচ হিসাবে নেওয়ার কথা ভাবছে সরকার। এর ফলে চালক এবং যাত্রী, উভয়েরই খরচের বোঝা কমবে।
এ দিন অ্যাপ-ক্যাব এবং বাইক-ট্যাক্সি সংস্থা ছাড়াও সংশ্লিষ্ট সমস্ত পরিষেবায় যুক্ত চালক সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠকে বেশ কয়েকটি সংস্থার অনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ওই সব সংস্থাকে কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি জরিমানা করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। কলকাতায় দফতর না থাকার কারণে একটি সংস্থা জরিমানার মুখে পড়তে চলেছে বলে খবর। এ ছাড়াও, কয়েকটি সংস্থার বিরুদ্ধে যথাযথ অনুমতি না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। একটি বাইক-ট্যাক্সি সংস্থার বৈধ লাইসেন্স না থাকার কারণে জরিমানা করা হয়েছে বলে খবর। ওই সংস্থার প্রতিনিধিরা এ দিন জরিমানার টাকা মেটান।
এ দিন অ্যাপ-ক্যাব এবং বাইক-ট্যাক্সি চালক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও একাধিক সমস্যার কথা তুলে ধরেন। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ড’-এর ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায়, এআইটিইউসি-র পক্ষ থেকে নওলকিশোর শ্রীবাস্তব এবং সিটু-র চালক সংগঠনের তরফে ইন্দ্রজিৎ ঘোষ হাজির ছিলেন। সব ক’টি সংগঠনের পক্ষ থেকেঅ্যাপ-ক্যাবের ভাড়া বৃদ্ধির দাবি করা হয়। যথেচ্ছ কমিশন আদায় এবং আইডি ব্লক করা নিয়েও সরব হন তাঁরা। লাক্সারি ট্যাক্সির ক্ষেত্রে কিলোমিটার-পিছু ১৮ টাকা ৭৫ পয়সা ভাড়াকে মাপকাঠি হিসাবে ধরার প্রস্তাব ওঠে। মন্ত্রী সেই প্রস্তাবখতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বলে খবর। পাশাপাশি, চালকেরা যাতে ভাড়ার অন্তত ৮০ শতাংশ হাতে পান, তা-ও বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী। বাইক-ট্যাক্সির ক্ষেত্রে এআইটিইউসি-র সংগঠনের নেতা শান্তি ঘোষ জানান, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক লাইসেন্স পেতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন চালকেরা। সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী।