প্রতীকী ছবি
ডেঙ্গি সচেতনতায় সারা বছর প্রচার চালায় কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু আসন্ন পুর ভোটের মরসুমে সেই কাজ কতটা ঠিকঠাক ভাবে করা যাবে, তা নিয়েই এখন চিন্তায় পুর প্রশাসন। পুর ভোটের দামামা বেজে গেলে ডেঙ্গি নিয়ে প্রচার করার জন্য কাজের লোক আদৌ মিলবে কি না, সেই প্রশ্নই আপাতত চিন্তায় রেখেছে পুর কর্তৃপক্ষকে।
শহরের ডেঙ্গি প্রতিরোধে পথে নেমে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের অনেকেই ১০০ দিনের কর্মী। এঁদের মধ্যে অনেকে আবার কাউন্সিলর-ঘনিষ্ঠ। ফলে ভোটের সময়ে কাউন্সিলরের হয়ে তাঁরা প্রচারে ব্যস্ত থাকলে ডেঙ্গি মোকাবিলার কাজ ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পুরকর্তারা। যদিও পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘পুর ভোটের সময় কাজে ফাঁকি দেওয়া হতে পারে, এমন আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় পুর প্রশাসনও কড়া নজর রাখবে। ডেঙ্গি দমনে প্রতি সপ্তাহে যে কাজ হয়ে থাকে, তার জন্য আগে থেকেই রোস্টার তৈরি করে দেওয়া হবে।’’ তবে এর পরেও সেই রোস্টার কতটুকু মানা হবে, তা নিয়েই সন্দেহ থেকে যাচ্ছে। ফলে ডেঙ্গি প্রচারের কাজে খামতি থাকার আশঙ্কাও বজায় থাকছে পুরো মাত্রায়।
তৃণমূল সরকার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে ২০১২-১৩ সালে কলকাতায় ডেঙ্গির প্রকোপ ভয়াবহ আকার নিয়েছিল। সেই সময়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৎকালীন মেয়র-সহ পুরকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, সারা বছর ধরেই ডেঙ্গি দমনের কাজ করতে হবে পুরসভাকে। সেই মতো চলতি বছরের শুরু থেকেই ডেঙ্গি নিয়ে প্রচারের কাজ শুরু করেছে পুর প্রশাসন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ডেঙ্গি প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে মিছিল করেন পুর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পুর কর্তাদের আশঙ্কা, ভোটের নির্ঘণ্ট বেরোলেই তা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন পুর প্রতিনিধিরা। ফলে কাউন্সিলরেরা নিজের ওয়ার্ডের ১০০ দিনের কর্মীদের ভোটের প্রচারে নামিয়ে দিলে ডেঙ্গি সংক্রান্ত প্রচার ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পুর আধিকারিকেরা।
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, গত বছর শহরে ডেঙ্গি-আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫,৭০০।
শহরের মোট জনসংখ্যার নিরিখে এই সংখ্যাটি কম হলেও আক্রান্তদের মধ্যে জনা দশেকের মৃত্যু হয়েছিল। তাই পুর প্রশাসনও এ বার আরও সতর্ক থাকার উপরে গুরুত্ব দিতে চাইছে। এমনকি, ডেঙ্গির জীবাণুবাহী মশার উৎস সন্ধানে ড্রোনের ব্যবহার শুরু করেছে পুরসভা। কিন্তু এপ্রিলে ভোট হওয়ায় এ বার সেই সব কাজে ঢিলেমি হতে পারে বলে মনে করছেন পুরকর্তারা।