ডুমুরজলা ইন্ডোর স্টেডিয়াম
পুর নির্বাচন প্রায় দোরগোড়ায়। কিন্তু, অর্থাভাবে ধুঁকতে থাকা হাওড়া পুরসভায় ভোটের আগেও উদ্বোধনের শিকে ছিঁড়ল না ছ’টি প্রকল্পের। যার মধ্যে রয়েছে পদ্মপুকুর জল প্রকল্পের ভিতরে দু’টি ১০ লক্ষ গ্যালনের জলাধার তৈরি, ডুমুরজলা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের সৌন্দর্যায়ন, আন্তর্জাতিক মানের সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, শরৎ সদনের ভিতরে ‘ফোর কে’ প্রযুক্তির তারামণ্ডল, ডুমুরজলা ইন্ডোর স্টেডিয়াম এবং ওলাবিবিতলায় একটি ভূগর্ভস্থ জলাধার। পুরসভার দাবি, মূলত অর্থাভাবেই এই প্রকল্পগুলির কাজ শেষ করা যায়নি। তবে যেগুলির কাজ ইতিমধ্যে প্রায় সম্পূর্ণ, সেগুলি উদ্বোধন করার চেষ্টা চলছে।
২০১৩ সালে তৃণমূল পরিচালিত পুর বোর্ড ক্ষমতায় এসে পরিষেবার মানের উন্নতি-সহ নিকাশি এবং পানীয় জল সরবরাহের উপরে জোর দেয়। এর জন্য তৎকালীন মেয়র রথীন চক্রবর্তীর উদ্যোগে ২০১৭ সালে পদ্মপুকুর জল প্রকল্পের ভিতরে শুরু হয় দু’টি ১০ লক্ষ গ্যালন ক্ষমতাসম্পন্ন জলাধার তৈরির কাজ। খরচ ধরা হয়েছিল ২১৫ কোটি টাকা। নতুন পুর বোর্ডের লক্ষ্য ছিল, এর সঙ্গে আরও ২০ লক্ষ গ্যালন জল উৎপাদন করে হাওড়া থেকে পানীয় জলের সমস্যা নির্মূল করা। কিন্তু গত তিন বছরে সেই কাজ শেষ তো হয়ইনি, উল্টে রাজ্য সরকার টাকা না দেওয়ায় কাজ প্রায় বন্ধের মুখে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২১৫ কোটি টাকার ওই প্রকল্পে নাজিরগঞ্জের ইনটেক জেটির কাজ যেমন এখনও শেষ হয়নি, তেমন বাকি রয়েছে জলাধারের ৫০ শতাংশ কাজও।
অন্য দিকে, মধ্য হাওড়া-সহ পুরসভার সংযুক্ত ওয়ার্ডগুলিতে জল সরবরাহ বাড়াতে ওলাবিবিতলায় একটি জলাধার তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালেই। জলাধার তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেখানে জল আনার ও সরবরাহ করার দু’টি পাইপলাইন বসেনি। তা নিয়ে তৈরি হয়নি সবিস্তার প্রকল্প রিপোর্টও (ডিপিআর)। ফলে আটকে গিয়েছে গোটা প্রকল্পের কাজ। যার জেরে হাওড়াকে পানীয় জলের সঙ্কট থেকে মুক্ত করার বিষয়টি চলে গিয়েছে বিশ বাঁও জলে।
অর্থাভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে ওলাবিবিতলায় আন্তর্জাতিক মানের একটি সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরির কাজও। প্রায় ৩২ কোটি টাকার ওই প্রকল্পে এত দিনে সম্পূর্ণ হয়েছে মাত্র সাত কোটি টাকার কাজ। পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, তাঁদের ভাঁড়ারে এত টাকা নেই যে একসঙ্গে এতগুলি প্রকল্পের কাজ শেষ করা যাবে।
কিন্তু কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেলেও ডুমুরজলা ইন্ডোর স্টেডিয়াম এবং শরৎ সদনে ‘ফোর কে’ প্রযুক্তির তারামণ্ডলের উদ্বোধন করা হচ্ছে না কেন?
পুর কর্তাদের বক্তব্য, ইন্ডোর স্টেডিয়াম পুনর্নির্মাণের টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। কিন্তু অর্থাভাবে কিছু কাজ বাকি থাকায় উদ্বোধন করা যাচ্ছে না। একই কারণে তারামণ্ডলের কাজ শেষ হলেও তা শহরবাসীর জন্য খুলে দেওয়া যায়নি।
হাওড়ার পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘যে প্রকল্পগুলি উদ্বোধন করা সম্ভব, সেগুলি দ্রুত উদ্বোধনের চেষ্টা হচ্ছে। বাকিগুলি অর্থসঙ্কটের জন্য উদ্বোধন করা যাচ্ছে না। কাজ চলছে।’’