সকাল থেকেই ভোগান্তিতে ভোডাফোনের গ্রাহকেরা। ছবি: সংগৃহীত।
সকাল থেকেই বেশ সমস্যায় পড়েছেন কলকাতার ভোডাফোন গ্রাহকদের একাংশ। মোবাইল থেকে কল করে কারও সঙ্গেই যোগাযোগ করতে পারছেন না তাঁরা। ফোনে যোগাযোগ হলেও, কারও কথা কেউ শুনতেও পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বেসরকারি মিডিয়া সংস্থার এক কর্মী জানালেন, তিনি এয়ারটেলের গ্রাহক। এয়ারটেলের মোবাইল পরিষেবা ব্যবহার করেন, এমন মানুষজনের কাছে ফোন করলে এ সমস্যা হচ্ছে না বলে দাবি তাঁর। তবে ভোডাফোনের নেটওয়ার্কে ফোন করলেই নাকি বেজায় বিপাকে পড়ছেন।
একই সমস্যায় জেরবার ভোডাফোনের গ্রাহকও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত এক ব্যক্তির দাবি, ‘‘সকাল থেকেই খুব ব্ল্যাঙ্ক কল হচ্ছে। ফলে ফোন এলে কোনও কথাই শুনতে পাচ্ছি না। লোকজনের সঙ্গে কমিউনিকেট করা যাচ্ছে না।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘আগেও নেটওয়ার্কের সমস্যা ছিল। তবে আজ তা আরও বেশি করে হচ্ছে।’’ শুক্রবার সকাল থেকেই এমন সমস্যায় নাজেহাল কলকাতা ও তার আশপাশের ভোডাফোনের গ্রাহকদের একাংশ। যদিও এ সমস্যা দ্রুত কাটিয়ে ওঠা যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছে ভোডাফোন-আইডিয়া।
লকডাউনের ফলে ঘরবন্দি গোটা দেশ। যেটুকু কাজকর্ম হচ্ছে, তার অধিকাংশই নিজের বাড়িতে বসে করতে হচ্ছে অনেককেই। এর মধ্যে মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মানুষজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে গিয়ে জেরবার হচ্ছেন বহু গ্রাহক। অভিযোগটা মূলত ভোডাফোন-আইডিয়া গ্রাহকদের। তবে অভিযোগ, এয়ারটেলের নেটওয়ার্কও পুরোপুরি ত্রুটিমুক্ত নয়। তবে ওই দু’টি সংস্থার তরফেই প্রাথমিক ভাবে এ নিয়ে বিশেষ সদুত্তর মেলেনি। যদিও এ দিন বিকেলে ভোডাফোনের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে স্বীকার করা হয়েছে, ‘‘কলকাতার কিছু এলাকায় সাময়িক ভাবে পরিষেবাজনিত সমস্যা হচ্ছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। এ বিষয়ে গ্রাহকদের দুর্ভোগের জন্য আমরা দুঃখিত।’’
আরও পড়ুন: কাল মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের পর, পরশুই লকডাউন বাড়ানোর ঘোষণা মোদীর?
গ্রাহকদের সমস্যা নিয়ে এয়ারটেলের তরফে সরকারি ভাবে কোনও বিবৃতি জারি করা হয়নি। তবে এয়ারটেলের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, কোনও গ্রাহকের এ ধরনের সমস্যা হলে তা নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখা হবে। সংশ্লিষ্ট গ্রাহক কোন নেটওয়ার্কের মোবাইলে ফোন করেছেন, তা প্রি-পেড মোবাইল না পোস্ট-পেড, তা রিচার্জ করা কি না— সে সব খতিয়ে দেখেই এর পরের পদক্ষেপ করা সম্ভব বলে মত ওই সংস্থার। যদিও এ নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ এয়ারটেল। যদিও এ দিনের বিবৃতির পরেও কত দ্রুত নিজেদের গ্রাহকদের সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক পরিষেবা দিতে পারবে ভোডাফোন-আইডিয়া, তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই।
আরও পড়ুন: আধিকারিকের মা করোনা আক্রান্ত, বন্ধ রাখা হল একটি ব্যাঙ্কের ভবানীপুর শাখা
এয়ারটেল বা ভোডাফোনের গ্রাহকদের তুলনায় মোটামুটি স্বস্তিতে রিলায়্যান্স জিয়ো-র গ্রাহকেরা। আপাতত কল ড্রপ বা নেটওয়ার্ক সমস্যা নেই বলেই জানিয়েছেন অনেকে। এমনটা কেন? জিয়ো-র তরফে একটি সূত্রের দাবি, লকডাউনের সময় গ্রাহকদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে জন্য বেশ প্রো-অ্যাক্টিভ তাদের অপারেশন অ্যান্ড মেনটেন্যান্স টিম। সেই সঙ্গে সক্রিয় রয়েছে নেটওয়ার্ক টিমের সদস্যরাও। ওই সূত্রের আরও দাবি, এি মুহূর্তে সারা দেশে যে পরিমাণ ডেটার চাহিদা রয়েছে, তার ৬০ শতাংশই মেটাচ্ছে জিয়ো। অন্য মোবাইল সংস্থাগুলি বাকি ৪০ শতাংশ চাহিদা পূরণ করছে। সেই সঙ্গে ফোর-জি পরিকাঠামোয় প্রচুর বিনিয়োগের ফলেও জিয়ো-র গ্রাহকেরা বাধাহীন পরিষেবার সুফল পাচ্ছেন। ওই সূত্রের আরও দাবি, দেশে ফোর-জি পরিকাঠামোতে বিনিয়োগের সময় ভোডাফোন বা এয়ারটেলকে কেন্দ্রের কাছে আয়করের পুরোটাই জমা করতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। যার ফলে ফোর-জি পরিকাঠামোয় যথাযথ বিনিয়োগ করতে পারেনি ওই সংস্থাগুলি। লকডাউনের ফলে ডেটার চাহিদা আকস্মিক বেড়ে যাওয়ায় এখন এর সুফল পাচ্ছে জিয়ো।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)