West Bengal Lockdown

লকডাউনে মেসে বন্দি পড়ুয়ারা, অভাব খাবারের

কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা শহরের বিভিন্ন মেসে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকেন।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২০ ০৫:৪১
Share:

আটক: যাদবপুরের পালবাজারে একটি মেসে দিন কাটাচ্ছেন দুই ছাত্র। নিজস্ব িচত্র

দুপুরে নুডলস্‌ আর রাতে ভাত-আলু সেদ্ধ। কখনও কখনও জুটছে ডাল। মুড়িও সব সময়ে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বিকেলে শুধু চা। শহরের মেসে বন্দি বেশ কিছু পড়ুয়াদের মেনু এখন এমনই। ফের কবে ট্রেন বা বাস চালু হবে, তারই অপেক্ষায় রয়েছেন ওঁরা।

Advertisement

কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা শহরের বিভিন্ন মেসে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকেন। লকডাউন শুরুর আগে মেসের অধিকাংশ পড়ুয়া চলে গেলেও নানা কারণে বাড়ি ফিরতে পারেননি বেশ কয়েক জন। বাড়ি থেকে দূরে, গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে কার্যত মেসবন্দি তাঁরা।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার ছাত্র দেবরাজ দেবনাথ জানান, জনতা কার্ফুর আগের দিন অর্থাৎ ২১ মার্চ, শনিবার তিনি শহরের বাইরে কাজে গিয়েছিলেন। জনতা কার্ফুর দিন আটকে পড়েন সেখানেই। ২৩ মার্চ, সোমবার কলকাতার যাদবপুর এলাকার পালবাজারে তাঁর মেসে ফিরে আসেন। দেবরাজ বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম মঙ্গলবার নদিয়ার বাড়িতে ফিরে যাব। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল থেকে ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর বাড়ি ফিরতে পারিনি।’’

Advertisement

দেবরাজ জানান, তাঁর সঙ্গে মেসে রয়েছেন আরও তিন পড়ুয়া। তাঁরাও বাড়ি ফিরতে পারেননি। ওই পড়ুয়ারা জানান, রেলের তরফে প্রথমে জানানো হয়েছিল, ৩১ মার্চ পর্যন্ত ট্রেন বন্ধ থাকবে। তাই তাঁরা ভেবেছিলেন, ৩১ তারিখ পর্যন্ত কোনও রকমে কাটিয়ে দেবেন মেসে। তার পরে বাড়ি ফিরে যাবেন। কিন্তু পরে বলা হয়, ট্রেন বন্ধ থাকবে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। ওই সময়সীমা আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা অনেকের। দেবরাজ বলেন, ‘‘এমন অবস্থা চললে কী ভাবে মেসে এত দিন কাটাব বুঝতে পারছি না। টাকাপয়সাও তো কমে আসছে। খাবারের সমস্যা তো রয়েছেই।’’

কলেজ স্ট্রিট এলাকার একটি মেসের তিন জন পড়ুয়া জানান, বাড়ি ফেরার জন্য গাড়ি ভাড়া করতে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু বেশি ভাড়া চাওয়ায় তাঁরা দিতে পারেননি। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই বিপদের সময়ে পরিবারের সদস্যদের জন্য চিন্তা হচ্ছে খুব।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী গীতশ্রী সরকার গবেষণার জন্য গরফার একটি মেসে থাকেন। গীতশ্রী জানাচ্ছেন, তাঁর বাড়ি মালদহে। গীতশ্রী যে মেসে থাকেন, সেই মেসের সবাই চলে গেলেও তিনি বাড়ি ফিরতে পারেননি। গীতশ্রী বলেন, ‘‘দেশে পরিস্থিতি ক্রমশই জটিল হচ্ছে। এই অবস্থায় বাড়ি ফেরা আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। নুডলস্‌ খেয়ে কয়েক দিন কাটাচ্ছিলাম। এখন সেটাও ঠিক মতো পাওয়া যাচ্ছে না। একটা ওষুধ নিয়মিত খেতে হয় আমাকে। সেই ওষুধও মিলছে না।’’ গীতশ্রী জানান, তাঁর আশপাশের কয়েকটি মেসে কয়েক জন ছাত্রী আছেন। কিন্তু মেস থেকে বেরিয়ে তাঁদের সঙ্গে যে দেখা করবেন, তারও উপায় নেই। তাই এক রকম মেসবন্দি দিন কাটছে তাঁর।

যাদবপুরের পালবাজার এলাকার আর এক মেসের আবাসিক সন্দীপ নস্কর জানান, তাঁর বাড়ি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার গোচারণে। তিনি যেখানে আছেন, সেই মেসে পাঁচ জন পড়ুয়া আছেন। সন্দীপ বলেন, ‘‘ট্রেন কবে ফের চালু হবে সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement