রুদ্ধ: আটকে দেওয়া হয়েছে রাস্তা। সোমবার, দেগঙ্গায়। নিজস্ব চিত্র
প্রথমে আন্তর্জাতিক স্তরে যাতায়াত বন্ধ। রবিবার থেকে রাজ্যের সীমানা সিল করার নির্দেশও জারি হয়েছে। তার পরেও কোথাও কোথাও জরুরি প্রয়োজন ছাড়াই ঘোরাঘুরি করছেন অনেকে। এ বার সেই অবাধ যাতায়াত রুখতে এলাকায় ঢোকার মূল পথ বন্ধ করা শুরু করলেন স্থানীয় মানুষজনই। সদর রাস্তা থেকে এলাকায় ঢোকার মুখে বাঁশ বেঁধে, ইট ফেলে আটকে দেওয়া হচ্ছে। সেখানে সেঁটে দেওয়া হয়েছে পোস্টার। তাতে লেখা, ‘সরকারের নিষেধ অনুসারে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ।’
সোমবার এমনই চিত্র দেখা গেল দেগঙ্গা থানার হাদিপুর-ঝিকরার শোলাপুকুর এলাকায়। সেখানকার বাসিন্দারা জানালেন, লকডাউনের পরেও পুলিশের নজর এড়িয়ে বেড়াচাঁপা-হাড়োয়া রোডে প্রচুর মানুষ যাতায়াত করছেন। পাড়ার ভিতরে, অলিগলিতে দিন-রাত চলছে গাড়ি, মোটরবাইক নিয়ে যাতায়াত। এ সব দেখে স্থানীয় বাসিন্দাদের একটি অংশ রাস্তায়, চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে বেরিয়ে পড়ছেন। যা নিয়ে এলাকায় বাড়ছে করোনা-আতঙ্ক। ওই এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ইয়াসিন মণ্ডল বলেন, ‘‘এলাকার রাস্তায় বহিরাগতদের যাতায়াত নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন অনেকে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থেই লকডাউনে অবাধ যাতায়াত বন্ধ রাখতে রাস্তা আটকে দেওয়া হয়েছে।’’
এর পাশাপাশি এ দিন করোনা নিয়ে সতর্কতার চিত্র দেখা গেল দেগঙ্গাতেই। জনসমাগম এড়াতে এক ব্যক্তির মৃত্যুর পরে তাঁর দেহ কলকাতার শ্মশানে না এনে এলাকাতেই দাহ করল পরিবার। পরিবারের মাত্র কয়েক জন মুখে মাস্ক পরে এলাকার ছোট একটি শ্মশানে পরস্পরের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব রেখে দাহকাজ সারলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার রাতে বাড়িতেই মারা যান বেড়াচাঁপার বাসিন্দা, পেশায় রেশন ডিলার নিতাইচন্দ্র নন্দী। সেই খবর পেয়ে এ দিন সকালে বহু মানুষ ভিড় করেন নিতাইবাবুর বাড়িতে। কলকাতার শ্মশানে সৎকারের জন্য নিয়ে যাওয়ার সময়ে অনেকেই যেতে চেয়েছিলেন। তখন নিতাইবাবুর ছেলে
বিজিতবরণ নন্দী লকডাউনের কথা স্মরণ করিয়ে জানান, সরকারি নির্দেশ অমান্য করে গাড়িতে এত জন যাওয়া যাবে না। এলাকার ছোট শ্মশানেই সৎকার হবে। এর পরেই পরিবারের হাতে গোনা কয়েক জন নিজেদের মধ্যে ফুট চারেক দূরত্ব রেখে নিতাইবাবুর দেহ সৎকার করেন। বিষয়টি নিয়ে দেগঙ্গার বিডিও সুব্রত মল্লিক বলেন, ‘‘খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোনো যাবে না। প্রত্যেকে এমন ভাবে সতর্ক হলে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই সহজ হবে।’’