প্রতীকী ছবি।
রাস্তায় আড়াআড়ি ভাবে রাখা লোহার গার্ডরেলের সামনে এসে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল ছোট মালবাহী গাড়িটি। সামনে থেকে দেখে সে ভাবে কিছু বোঝা না গেলেও, পিছনের দিকে যেতেই ভুল ভাঙল পুলিশকর্মীদের। দেখলেন, হাঁটু মুড়ে মাথা গুঁজে ঘেঁষাঘেঁষি করে গাড়িতে বসে রয়েছেন ১৬ জন যুবক। পুলিশকে দেখে তাঁদের কেউ কেঁদে উঠলেন, আবার কেউ করজোড়ে অনুরোধ করলেন ছেড়ে দিতে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকদের সকলেই পেশায় রাজমিস্ত্রি। বাড়ি মেদিনীপুর। সোমবার সন্ধ্যায় দুই নম্বর জাতীয় সড়কের মাইতিপাড়ার ট্র্যাফিক চেকপোস্টে ধরা পড়া গাড়িটিতে ছিলেন তাঁরা। পুলিশকে তাঁরা সকলেই জানিয়েছেন, লকডাউনের কারণে রোজগার বন্ধ থাকায় কোনও ভাবে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছিলেন।
হাওড়া সিটি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ট্র্যাফিক) অর্ণব বিশ্বাস বলেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকদের গাড়ি আটকানো হলেও তাঁদের সঙ্গে মানবিক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতির কথা বুঝিয়ে বলে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ তাই এ দিনও ওই ১৬ জন শ্রমিক বা গাড়িচালককে আটক করেনি পুলিশ। উল্টে এই পরিস্থিতিতে কেন ওই শ্রমিকদের বাড়ি ফেরা উচিত নয়, সে কথা বুঝিয়ে বলে এবং চা-বিস্কুট খাইয়ে ফের তাঁদের কাজের জায়গায় ফেরত পাঠিয়েছেন কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা।
আরও পড়ুন:
পুলিশ সূত্রের খবর, হাওড়া শহরের মাইতিপাড়া, ধূলাগড়, নিবড়া-সহ সাতটি জায়গাকে শহরের সীমানা এলাকা বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। লকডাউন শুরুর পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই দু’-তিনটি করে শ্রমিকবোঝাই গাড়ি ধরা পড়েছে ওই সমস্ত সীমানার চেকপোস্টে। এমনও দেখা গিয়েছে, ছোট মালবাহী গাড়িতে প্লাস্টিকের ত্রিপলের নীচে গাদাগাদি করে শুয়ে রয়েছেন শ্রমিকেরা। এক ঝলক দেখলে মনে হবে যেন গাড়িতে করে মালপত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু প্লাস্টিকের ঢাকনা সরালেই দেখা যাচ্ছে প্রকৃত চিত্র। যেমন, এ দিন মাইতিপাড়া চেকপোস্টে ধরা পড়া গাড়িটির দুই পাশের ও পিছনের দিকের ডালা বেশ উঁচু ছিল। ফলে চলন্ত গাড়ি দেখে কোনও ভাবেই বোঝা সম্ভব ছিল না যে, তাতে লুকিয়ে রয়েছেন যাত্রীরা। ধরা পড়া ওই গাড়িটি নৈহাটি থেকে আসছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)