প্রতীকী চিত্র।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে সকলেই এখন ঘরবন্দি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার এই সময়ে সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়েছে ছোটরা। বাইরে খেলতে যাওয়া নিষেধ। সময় তা হলে কাটবে কী করে? মুশকিল-আসান হতে তাই হাজির ‘রূপু মাসি’ ও ‘গল্প দিদা’রা।
‘‘আমার মেয়ের বয়স পাঁচ। ছোট থেকেই গল্প পড়ে শোনাতাম। এক দিন মনে হল, অন্যদেরও শোনাই। আজকাল তো বাচ্চারা খেতে বসে শুধু মোবাইল ফোন আর টিভি দেখে। বাবা-মায়েদের ইচ্ছা থাকলেও সব সময়ে গল্প শুনিয়ে উঠতে পারেন না। এ সব ভেবেই ‘রূপু মাসির গল্প পাঠের আসর’ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ শুরু করেছি’’— বললেন সুচরিতা মণ্ডল। অনেকের কাছেই যিনি পরিচিত রূপকথা নামে। জানালেন, লীলা মজুমদার, সুকুমার রায়, উপেন্দ্রকিশোরের গল্প, তুতু ভুতু, রুশ দেশের উপকথা ছাড়াও অনেক গল্প পড়েছেন। এই লকডাউনের সময়ে বেশি করে পড়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। শুরু করবেন আর্কাদি গাইদারের ‘নীল পেয়ালা’ পড়া। পুরো গল্পপাঠ রেকর্ড করে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পোস্ট করেন সুচরিতা। জানালেন, এই সময়ে আরও বেশি সংখ্যায় গল্প পড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। যাতে গল্প শুনেই দিনের বেশ কিছুটা সময় কাটে শিশু শ্রোতাদের। সঙ্গে তাদের বাবা-মায়েদেরও।
‘গল্প দিদা’ সুদেষ্ণা মৈত্র বছর তিনেক ধরে ছোটদের নিয়ে ওয়ার্কশপ করছেন। নিজে তাদের গল্প বলেন। ছোটদের দিয়েও গল্প বলান। এ বার তিনিও অনলাইনে চলে এসেছেন। গোখেল মেমোরিয়াল স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত বাংলার শিক্ষিকা সুদেষ্ণা বললেন, ‘‘এখন ছোটরা যাতে মন খারাপ না করে, চনমনে থাকে, সেটা নিশ্চিত করা খুব জরুরি।’’ তাই অনলাইন ‘মিটিং সাইট’-এ গল্প বলার আসর শুরু করছেন তিনি।
গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত অঙ্কের শিক্ষিকা অরুন্ধতী মুখোপাধ্যায় ফেসবুকে শুরু করেছেন ধাঁধার আসর। তিনি টাইমলাইনে দিচ্ছেন নানা রকম অঙ্কের ধাঁধা। তাঁর কথায়, ‘‘দীর্ঘ বেশ কিছু দিন আমাদের গৃহবন্দি থাকতে হবে। বড়দের কাছেই এটা বেশ অসুবিধার। বাচ্চাদের পক্ষে তো আরও বেশি। দেখতে হবে, ওরা যেন মনমরা না হয়ে পড়ে।’’ তিনি জানালেন, শুধু ছোটরা নয়, এই ধাঁধায় মজা পাবেন বড়রাও।