পিটিআই-এর প্রতীকী ছবি।
নৈশ কার্ফু চালু না হলেও রাতের শহরে লকডাউন বিধি অমান্য করে রাস্তায় ঘুরে বেড়ালে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। তার জন্য মঙ্গলবার রাত থেকেই শহরে বৃদ্ধি করা হচ্ছে নাকা তল্লাশির জায়গা। একই সঙ্গে, জরুরি কাজ ছাড়া কেউ যাতে ওই সময়ে রাস্তায় গাড়ি নিয়ে না-বেরোন, তা দেখার জন্য থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে গাড়ি থামিয়ে অনুমতিপত্র দেখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লালবাজার সূত্রের খবর, মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড় আমপান নিয়ে বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সের সময়ে পুলিশ কমিশনার ওই নির্দেশ জারি করেন। সেখানে তিনি জানান, সারাদিন অনেক কিছুতেই ছাড় দেওয়া হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি অফিসও খুলে গিয়েছে। কিন্তু ৬টার পরে সব দোকানপাট বন্ধ থাকার কথা। তার পর থেকে পরের দিন ভোর পর্যন্ত লকডাউন যাতে পালন হয়, তা দেখতে হবে বাহিনীকে।
কেন্দ্রীয় সরকার সন্ধ্যা ৭টা থেকে পরের দিন সকাল ৭টা পর্যন্ত নৈশ কার্ফু চালুর কথা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু রাজ্যের মানুষকে দমবন্ধ করে উদ্বেগে রাখা ঠিক নয় বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্ফুকে সমর্থন না-করলেও তিনি সোমবারই বলেছিলেন, ৭টার পরে কেউ যেন বাইরে না-থাকেন। কেউ জমায়েত করলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছাড় মেলার পরেই সোমবার থেকে শহরের রাস্তায় মানুষের ভিড় বাড়তে শুরু করে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, মঙ্গলবার সকালে বিভিন্ন অংশে মানুষের জমায়েত এবং গাড়ির লাইন দেখে বোঝার উপায় ছিল না যে লকডাউন চলছে। ওই পরিস্থিতিতে রাতে যাতে বেআইনি জমায়েত কিংবা প্রমোদ ভ্রমণের জন্য কেউ বেরিয়ে না-পড়েন, তা আটকাতেই রাতে নাকা তল্লাশিতে কড়া হতে বলা হয়েছে বলে সূত্রের দাবি। এমনিতেই শহরের কোথাও কার্ফু জারি হয়েছে কি না, তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছিল মানুষের মনে। এ দিন লালবাজার রাতের শহরে লকডাউন কড়া ভাবে বলবৎ করতে বলায় সেই ধন্দের কিছুটা নিরসন হয়েছে বলে পুলিশ অধিকারিকদের অনুমান। পুলিশের এক কর্তা জানান, লকডাউন ২৪ ঘণ্টাই বলবৎ রয়েছে। দিনের বেলায় কিছু ছাড় রয়েছে। কিন্তু রাতে সেই ছাড় নেই। তাই প্রয়োজনীয় অনুমতি ছাড়া যাঁরাই রাতে বাইরে বেরোবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পুলিশের ব্যাখ্যা, কার্ফু চালু হলে কোনও কিছুরই ছাড় মিলত না। সে ক্ষেত্রে জরুরি পরিষেবা প্রদানকারীদেরও অনুমতি নিয়ে বাইরে বেরোতে হত। কিন্তু কঠোর ভাবে লকডাউন পালন করা হলে যাঁদের জরুরি কাজে বাইরে বেরোনোর প্রয়োজন রয়েছে, তাঁরা তা পারবেন। তবে নাকা তল্লাশিতে তাঁকে যথাযথ প্রমাণ দেখাতে হবে। রাতে ফাঁকা রাস্তার সুযোগ নিয়ে কেউ বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালালেও নাকা তল্লাশিতে তিনি ধরা পড়বেল বলে দাবি পুলিশের একাংশের।
বর্তমানে চোখ রাঙাচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় আমপান। আজ, বুধবার এবং আগামী কাল বৃহস্পতিবার ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে শহরে। ফলে ওই দু’রাতে নাকা তল্লাশিতে ঘাটতি থাকতে পারে বলে দাবি নিচুতলার পুলিশকর্মীদের।