প্রতীকী ছবি।
লকডাউনের কারণে অনলাইনে ক্লাস শুরু হয়েছে কারও। কারও সামনে বোর্ডের পরীক্ষা। অথচ বন্ধ বইয়ের দোকান। অনলাইনে বেশির ভাগ বই অমিল। ফলে সমস্যায় পড়েছে শহরের আইসিএসই এবং সিবিএসই বোর্ডের বহু পড়ুয়া।
মার্চ-এপ্রিল থেকে আইসিএসই এবং সিবিএসই বোর্ডের স্কুলগুলির নতুন ক্লাস শুরু হয়। ওই সব স্কুলগুলির অধিকাংশ পড়ুয়া জানাচ্ছে, লকডাউনের মধ্যেই অনলাইনে পরীক্ষার মার্কশিট এবং নতুন ক্লাসে ওঠার কথা জেনে গিয়েছে তারা, কিন্তু বুকলিস্ট মিলিয়ে নতুন বই কেনার সুযোগ হয়নি। ফলে নতুন ক্লাসে উঠলেও সে ভাবে পড়াশোনা করতে পারছে না। তবে রাজ্য সরকারি, সরকার পোষিত বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে নতুন শিক্ষাবর্ষ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়ায় বই নিয়ে এই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না ওই সব স্কুলের পডুয়াদের।
আইসিএসই এবং সিবিএসই বোর্ডের কয়েক জন ছাত্রছাত্রী জানাচ্ছে, বইয়ের অভাব সব চেয়ে বেশি একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে ওঠা পড়ুয়াদের। আগামী বছরে তারা দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় বসবে। অথচ এখনও অনেকেরই বই নেই। সল্টলেকের সিএ স্কুলের ছাত্রী দীপশিখা কর রায় বলছে, “দ্বাদশ শ্রেণির কয়েকটা বই আগেই কিনেছিলাম। কিন্তু রসায়ন এবং জীববিজ্ঞানের বই কেনা হয়নি। এখন দোকান বন্ধ। এ দিকে অনলাইনে যে লেখকদের বই চাইছি, তা পাচ্ছি না। অথচ পরীক্ষা এগিয়ে আসছে।’’ লোরেটো ডে স্কুলের (বৌবাজার) সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী আরুষি গঙ্গোপাধ্যায় জানাচ্ছে, তাদের স্কুলে অনলাইন ক্লাস অনেক হোমওয়ার্ক দিচ্ছে, কিন্তু বই না থাকায় অসুবিধা হচ্ছে। বড় দিদিদের থেকে যে পুরনো বই নিয়ে আসবে, সে সুযোগও নেই। আরুষির মা ঈপ্সিতা বলেন, “ইন্টারনেট থেকে পড়ার জিনিস অনেক কিছুই নামিয়ে দিয়েছি। কিন্তু বই না থাকার সমস্যাটা তো রয়েই যাচ্ছে।” গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলের ছাত্রী রূপ্সা গৌরের মা স্বর্ণালী বলেন, “অনলাইন ক্লাসে শিক্ষিকারা নোটস দিচ্ছেন। সেই নোটস মোবাইলে ছবি তুলে নিচ্ছি। কিন্তু এ ভাবে কত দিন?’’
সমস্যার কথা স্বীকার করছেন আইসিএসই এবং সিবিএসই বোর্ডের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। আইসিএসই বোর্ড পরিচালিত ক্যালকাটা গার্লস স্কুলের প্রিন্সিপাল বাসন্তী বিশ্বাস বলেন, “আমাদের বেশির ভাগ ছাত্রীর বাড়িতে বই পাঠানোর ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু লকডাউনের জন্য বই না পাওয়ার সমস্যাও আছে। একাদশ শ্রেণির অনেকের কাছেই বই নেই। বই সব পড়ুয়ার হাতে পৌঁছনোর আগেই তো লকডাউন হল।’’
সিবিএসই পরিচালিত মহাদেবী বিড়লা ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমির প্রিন্সিপাল অজন্তা সাহা বলেন, “সিবিএসই বোর্ডের পাঠ্যপুস্তক পিডিএফ, ই-বুক আকারে রয়েছে। পড়ুয়ারা তা-ই ডাউনলোড কর়ে পড়ছে।’’
তবে নোটসের ছবি বা ই-বুকের চেয়ে নতুন বই হাতে পাওয়ার আশাতেই রয়েছে পড়ুয়াদের একাংশ। কলেজ স্ট্রিটের এক বই বিক্রেতা দোলগোবিন্দ পাত্র বলেন, “লকডাউনের আগে কয়েক জন পড়ুয়া আমাদের থেকে বই নিতে পেরেছে।’’ তিনি জানান, সম্প্রতি কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তিতে কিছু দোকান খোলায় ছাড় রয়েছে দেখে কয়েক জন দোকান খুলতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ওই এলাকা কন্টেনমেন্ট জ়োনের মধ্যে পড়ায় পুলিশ দোকান বন্ধ করে দিতে বলেছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)