কুন্দনকুমার সিংহ
হাতে টাকা নেই। মাথায় ছাদ নেই। দীর্ঘ পথ হেঁটে রাস্তায় অসুস্থ হয়ে পড়া এমন এক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে গিয়ে শুশ্রূষা করলেন বাগুইআটি থানার পুলিশকর্মীরা। আপাতত তাঁর থাকারও ব্যবস্থা হয়েছে।
লকডাউনে বন্ধ কারখানা। তাই আপাতত শ্রমিকদের ছুটি। কাজ চালু হলে ফের ডাকা হবে তাঁদের। ২১ জন শ্রমিক মিলে নিজেদের সামান্য টাকায় ঘর ভাড়া করলেও পারেননি এক জন। কারণ বিহার থেকে আসা ওই শ্রমিকের কাছে কোনও টাকা ছিল না। দিন কয়েক ওই এলাকায় পড়ে থাকেন তিনি। কী করবেন বুঝতে না পেরে শেষে বারাসতের কারখানা থেকে হাঁটতে শুরু করেন ওই শ্রমিক। অভুক্ত অবস্থায় দীর্ঘ পথ হেঁটে সোমবার পৌঁছন বাগুইআটিতে। এর পরেই অসুস্থ হয়ে বাগুইআটি বাসস্ট্যান্ডে বসে পড়েন তিনি। খবর পেয়ে তাঁকে দেখতে যান বাগুইআটি থানার পুলিশকর্মীরা। সব শুনে ওই শ্রমিকের খাবারের ব্যবস্থা করেন তাঁরা। এমনকি থানায় তাঁর থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষাও হয়েছে। আপাতত সুস্থ তিনি।
কুন্দনকুমার সিংহ নামে ওই শ্রমিক জানিয়েছেন, মাস চারেক আগে এক ঠিকাদারের মাধ্যমে বিহার থেকে ২২ জন শ্রমিক বারাসতের পাউরুটি তৈরির কারখানাটিতে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি কিষাণগঞ্জের পওয়াখালির বাসিন্দা। মাঝে বাড়িও গিয়েছিলেন। কিন্তু লকডাউনের আগে কারখানায় ফিরে আসেন। কাঁচামাল না থাকায় পাঁচ দিন আগে কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। তখন শ্রমিকদের চলে যেতে বলা হয়। অন্যরা ঘর ভাড়া করলেও টাকা না থাকায় কুন্দন পারেননি। এ দিন তিনি বলেন, “টাকা ছিল না। খাবার পাচ্ছিলাম না। কয়েক দিন ধরে খাইনি। কী করব বুঝতে না পেরে হাঁটতে শুরু করি। আর শরীরটা টানতে পারলাম না। পুলিশই আমাকে খাবার দিয়েছে, থাকতে দিয়েছে।”
একটি সূত্র মারফত বাগুইআটি পুলিশের কাছে খবর পৌঁছয়। সংশ্লিষ্ট থানা জানিয়েছে, কুন্দনের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। লকডাউন পর্যন্ত সেই ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। থাকার জায়গার খোঁজ চলছে। যত ক্ষণ তা না পাওয়া যাচ্ছে, তিনি
থানাতেই থাকবেন।