Cancer Patients

রাজ্যের সমস্ত ক্যানসার রোগীর তথ্য একত্রিত করতে উদ্যোগী সরকার

মেডিক্যাল কলেজের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি জেলা হাসপাতাল ও বেসরকারি হাসপাতালও এই পোর্টালে রোগীদের তথ্য নথিভুক্ত করছে। তাতে ৯৮৪৭ জন পুরুষ ও ১১৫১ জন মহিলা রোগীর তথ্য রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:৫৮
Share:

‘ক্যানসার রেজিস্ট্রি প্রোগ্রাম’ চালু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। প্রতীকী ছবি।

রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছেন অসংখ্য ক্যানসার রোগী। তাঁদের সকলের তথ্য নথিভুক্ত করতে চায় স্বাস্থ্য দফতর। যাতে বোঝা যায়, জনসংখ্যার নিরিখে কত জন কী ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত। সেই লক্ষ্যেই ‘ক্যানসার রেজিস্ট্রি প্রোগ্রাম’ চালু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। শেষ এক বছরে এই কর্মসূচিতে গতি এসেছে বলে খবর। শুক্রবার পর্যন্ত ১৯ হাজার ৯০৫ জন ক্যানসার রোগীর নাম ও তথ্য নথিভুক্ত করা হয়েছে।

Advertisement

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই কর্মসূচি চালু হয় রাজ্যে। প্রথম দিকে বিষয়টি ছিল হাসপাতাল-কেন্দ্রিক। পরে রাজ্যের যে কোনও প্রান্তে, যেখানে ক্যানসারের চিকিৎসা হচ্ছে, সেখানে কোনও রোগী গেলেই তাঁর তথ্য এই কর্মসূচির পোর্টালে নথিভুক্ত করায় জোর দেয় রাজ্য। মেডিক্যাল কলেজের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি জেলা হাসপাতাল ও বেসরকারি হাসপাতালও ওই পোর্টালে রোগীদের তথ্য নথিভুক্ত করছে। তাতে ৯৮৪৭ জন পুরুষ ও ১১৫১ জন মহিলা রোগীর তথ্য রয়েছে। এঁদের মধ্যে বক্ষ ও স্তন ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যাই (৩৯৫৩) সব থেকে বেশি। এর পরেই আছে তলপেটের ক্যানসার (২৭২৪) এবং ‘হেড অ্যান্ড নেক’ ক্যানসার (২৩৯৩)। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের রেডিয়েশন অঙ্কোলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক শ্রীকৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, “কোনও ক্যানসার রোগী যেখানেই যাবেন, তাঁর তথ্য এক জন অচিকিৎসকও নথিভুক্ত করতে পারবেন। রোগী-পিছু নির্দিষ্ট আইডি দেওয়া হচ্ছে। পোর্টালে ওই আইডি দিলেই রোগীর সব তথ্য পাওয়া যাবে।”

তিনি জানান, পোর্টালে যাঁদের তথ্য নথিভুক্ত হয়েছে, তাঁদের উপরে নজর রাখাও সম্ভব হচ্ছে। ধীরে ধীরে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালও এই কর্মসূচিতে যুক্ত হয়েছে। জেলা হাসপাতালেও সপ্তাহে দু’দিন ক্যানসার বহির্বিভাগ ও এক দিন বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তৈরি বোর্ড বসানোর নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। সেখানে শল্য, ইএনটি, স্ত্রী-রোগ, রেডিয়োলজি, প্যাথলজি এবং ক্লিনিক্যাল অঙ্কোলজিস্টরা থাকবেন। ওই চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে ক্যানসার চিহ্নিতকরণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে। দ্বিতীয় পর্যায়ে শিগগিরই তাঁরা কাজ শুরু করবেন। তৃতীয় পর্যায়ে শহরের ক্যানসার শল্য চিকিৎসকেরা জেলা হাসপাতালে গিয়ে অস্ত্রোপচারের প্রশিক্ষণ দেবেন। জেলা হাসপাতালে আসা কোনও রোগীর ক্যানসার সন্দেহ হলে, তাঁকে পাঠানো হবে বোর্ডের কাছে। সেখানেই যাবতীয় পরীক্ষা ওচিকিৎসা হবে। তবে, জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা করা না গেলে বোর্ড তার কারণ লিখিত ভাবে জানাবে। সেই নথি নিয়েই আরও বড় হাসপাতালে যাবেন রোগী। জেলার হাসপাতালেও বায়প্সির প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। ডাক্তারির স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের তিন মাস গ্রামে গিয়ে পরিষেবা দেওয়ার মধ্যে এক মাস ক্যানসার চিকিৎসায়লাগানো হবে। স্তন ক্যানসার শল্য চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার বলেন, “দেশে প্রায় ৫০ শতাংশ ক্যানসার রোগীর মৃত্যুর প্রধান কারণ চিকিৎসায় বিলম্ব। দ্রুত রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা শুরুর জন্য এই সমস্ত পদক্ষেপ খুবই কার্যকরী হবে।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement