জমা জলে বংশবিস্তার করে ডেঙ্গির মশা। —ফাইল চিত্র।
তীব্র গরমে খানিকটা স্বস্তি দিয়েছে কয়েক পশলা বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি। তবে তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। কারণ, বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির জমা জলেই বংশবিস্তার করে ডেঙ্গির মশা। তাই আগেভাগেই পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রস্তুত হতে সোমবার বৈঠক করলেন স্বাস্থ্যসচিব। সেখানে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা, সমস্ত জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা, সেচ, পঞ্চায়েত এবং পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের আধিকারিকেরাও ছিলেন।
গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত, অর্থাৎ, এপ্রিলের গোড়া পর্যন্ত রাজ্যে ১ লক্ষ ২৩ হাজার ৭৪০ জনের ডেঙ্গি পরীক্ষা হয়েছে। তাতে ৮১৩ জনের পজ়িটিভ এসেছে। গত বছর এই সময়কালে (১৪ সপ্তাহ) আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০১৭। পরীক্ষা হয় ১ লক্ষ ৩০ হাজার ৩৯৯ জনের। স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, আক্রান্তের সংখ্যা দেখে আপাতত স্বস্তি মিললেও এখনই নিশ্চিন্ত হওয়ার মতো পরিস্থিতি আসেনি। এক কর্তার কথায়, ‘‘এখনই বলা যাচ্ছে না, এ বারে ডেঙ্গির প্রকোপ কম কি না। জুলাই, অগস্ট, সেপ্টেম্বর— এই তিন মাস খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি বেশি হয়, তা হলে সমস্যা বাড়বে।’’ গত বছর রাজ্যে ১ লক্ষ ১ হাজার ৭৪ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। যা গত ১২ বছরের মধ্যে সর্বাধিক।
২০২৪-’২৫ অর্থবর্ষের বাজেটেও ডেঙ্গির উপরে জোর দিয়েছে রাজ্য। স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, এ বারে পরিস্থিতি যাতে নাগালের বাইরে না যায়, তা নিশ্চিত করতে আগেই বৈঠক সেরে নিলেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। প্রতিটি জেলার হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডেঙ্গি পরীক্ষা এবং চিকিৎসার পরিকাঠামো প্রস্তুত রয়েছে কি না, তা দেখে নিতে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মশাবাহিত ওই রোগ প্রতিরোধে যে সমস্ত প্রশিক্ষণ রয়েছে, সেগুলি এখনই শুরু করতে হবে। পাশাপাশি, সেচ দফতরকে রাজ্যের প্রতিটি খালের দিকে নজর দিতে হবে। যাতে কোথাও জলের প্রবাহ থমকে না থাকে। মশা রোধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে পঞ্চায়েত এবং পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরকে।
চলতি মরসুমে আক্রান্তের তালিকায় প্রথম দিকেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া, মালদহ, কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা। ভোটের এই কয়েক মাসে যাতে কোনও জেলায় ডেঙ্গিরোধী কর্মসূচি বন্ধ না থাকে, সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।