CV Ananda Bose

মুখ্যমন্ত্রীকে সামাজিক ভাবে বয়কটের ঘোষণা রাজ্যপাল বোসের, শাসকদল স্মরণ করাল ‘কুৎসিত অভিযোগ’

আরজি কর-কাণ্ডের আবহে এ বার মুখ্যমন্ত্রীকে সামাজিক ভাবে বয়কট করার ঘোষণা করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বৃহস্পতিবার এক ভিডিয়ো বার্তায় এই মন্তব্য করেন তিনি। পাল্টা বিঁধেছে তৃণমূলও।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:২৫
Share:

(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আরজি কর-কাণ্ডের আবহে প্রতিবাদরত সাধারণ মানুষের আন্দোলনকে সমর্থন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো বার্তায় রাজ্যপাল জানান, তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামাজিক ভাবে বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নাম না করে ‘লেডি ম্যাকবেথ’ বলে কটাক্ষ করছেন বোস। তিনি বলেন, “রাজ্যপাল হিসাবে আমি মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারি না। বাংলার সমাজের পাশে দাঁড়িয়ে আমি স্থির করেছি, আমি মুখ্যমন্ত্রীকে সামাজিক ভাবে বয়কট করব। আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও সরকারি মঞ্চে থাকব না। কোনও সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী যুক্ত থাকলে, সেখানে আমি থাকব না।”

Advertisement

মঙ্গলবার দুপুর থেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্নায় বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য দফায় দফায় ইমেল চালাচালি হলেও, সদর্থক কিছুই এখনও হয়নি। বৃহস্পতিবার ফের এক বার নবান্নে বৈঠকের জন্য ডাকা হয়েছিল জুনিয়র ডাক্তারদের। আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদল নবান্ন পর্যন্ত যাওয়ার পরও ভেস্তে গিয়েছে বৈঠক। এই আবহে বৃহস্পতিবার রাতে ভিডিয়ো বার্তায় রাজ্যপাল বোস এই পরিস্থিতির জন্য সরকারকেই দায়ী করলেন। তিনি বলেন, “আমার মতে, সমাজের ও নির্যাতিতার বাবা-মায়ের ভাবাবেগকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে ব্যর্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। নবান্ন সত্যিটা মুছে ফেলতে পারে না। আপনি কাউকে কাউকে কখনও কখনও বোকা বানাতে পারেন, কিন্তু সবাইকে সবসময় বোকা বানাতে পারবেন না।”

রাজ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দিকেই বল ঠেলছেন বোস। বাংলার সাংবিধানিক প্রধানের মতে, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। রাজ্যে আইনের শাসন বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। যিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী, তিনিই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিনিই মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সকলকে রক্ষা করার বদলে, প্রতিবাদে নেমেছেন।”

Advertisement

একই সঙ্গে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের ভূমিকা নিয়েও ভিডিয়ো বার্তায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। দাবি তুললেন যাতে পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ করা হয়। বোস জানিয়েছেন, পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীরা যে অভিযোগগুলি তুলছেন, তাতে তিনি ‘মর্মাহত’। কমিশনারের ভূমিকায় তিনি ‘লজ্জিত’ বলেও মন্তব্য বোসের। পুলিশ কমিশনারের ভূমিকা বিরক্তি প্রকাশ করে তিনি বলেন, “মানুষ দাবি জানাচ্ছে, তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার জন্য। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি পদক্ষেপ করা উচিত।”

রাজ্যপালের এই ভিডিয়ো বার্তার পর পাল্টা বিঁধেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষও। তাঁর ব্যাখ্যায়, রাজ্যপালের পদে বসে বোসের এক্তিয়ার নেই মুখ্যমন্ত্রীকে সামাজিক ভাবে বয়কটের ঘোষণা করার। তিনি বলেন, “রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যে কুৎসিত অভিযোগগুলি রয়েছে, তাতে তো তাঁকেই সামাজিক ভাবে বয়কট করা উচিত। মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই বলেছেন, তিনি রাজভবনে একা যাবেন না। ১৫ অগস্ট সাংবিধানিক সৌজন্যের জন্য রাজভবনে গিয়েছিলেন। কিন্তু রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেননি। খোলা বারান্দায় অন্য সকলের সঙ্গে বসেছিলেন। রাজ্যপালের সঙ্গে দূরত্ব রেখেছেন। রাজ্যপাল এই কথাগুলি বলতে পারেন না। তিনি সামাজিক ভাবে বয়কট হচ্ছেন বলেই এই কথাগুলি বলছেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement