বুঝেছেন? ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’-এর একটি অনুষ্ঠানে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ও পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। নিজস্ব চিত্র
প্রদীপের নীচেই অন্ধকার। সেখানে আলোকপাত করা না গেলে দুর্ঘটনা কমানো কার্যত অসম্ভব। পরিবহণ দফতরের অন্দরের এই খামতির কথা বুধবার ঠারেঠোরে স্বীকার করে নিলেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দক্ষ চালক তৈরি করা না গেলে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কোনও দিনই সফল হবে না।’’
কী সেই গলদ? আর তা শোধরাতে মন্ত্রীর দাওয়াই-ই বা কী? এ রাজ্যে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকেই পরিবহণমন্ত্রী একাধিক বার বলেছেন, চালকের ভুলে দুর্ঘটনা ঘটলে শুধু তিনি নন, তাঁকে যিনি লাইসেন্স দিয়েছেন বা তিনি যেখানে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, দায়ী হবেন তাঁরাও। মন্ত্রী মনে করেন, সঠিক প্রশিক্ষণ ছাড়াই কিছু ব্যক্তি লাইসেন্স পেয়ে যাচ্ছেন। লাইসেন্স পাওয়ার পিছনে মোটর ট্রেনিং স্কুলগুলির সঙ্গে পরিবহণ দফতরের যোগসাজসের অভিযোগ অনেক দিনের। এ বার এ ধরনের অসাধু উপায় বন্ধে কঠোর হওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন মন্ত্রী।
পরিবহণ দফতরের কর্তাদের মতে, গাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা ঠিক ভাবে হচ্ছে না। যার জেরে অনেক সময়েই দুর্ঘটনা ঘটছে। অন্য দিকে, চালকদের ভুলেও প্রায়শই বিভিন্ন দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটছে। কাজেই পরিবহণ দফতরের অন্দরের এই অসাধু চক্র ভাঙতে না পারলে দক্ষ চালক তৈরি হবে না বলেই দাবি ওই কর্তাদের। এই অসাধু উপায় বন্ধে মন্ত্রীর দাওয়াই, ‘‘খড়গপুর আইআইটি-র সহায়তায় রাজ্যের নানা ড্রাইভিং স্কুলের জন্য বিশেষ সিলেবাস হয়েছে। ১ এপ্রিল থেকে তা চালু হবে। ড্রাইভিং স্কুল থেকে পুরো কোর্স পাস করে তবে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবেন চালকেরা।’’ এ ছাড়া, নিয়মিত মোটর প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলির উপরে নজরদারি চালানোর কথাও ঘোষণা করেন মন্ত্রী।
অসাধু চক্র ভাঙতে পরিবহণ দফতরের যে সব অফিস থেকে লাইসেন্স, গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়া হয়, সেখানে সিসিটিভির মাধ্যমে নজরদারি চালানো হবে বলেই জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘ড্রাইভিং লাইসেন্স বা ফিটনেস সার্টিফিকেট সংগ্রহের পুরো পদ্ধতি সিসিটিভিতে নজরবন্দি থাকবে। ফলে অভিযোগ এলে তা তদন্তের ক্ষেত্রে সুবিধা হবে।’’
অন্য দিকে, শহরের নিরাপত্তার স্বার্থে সিসিটিভি রাখার কথা স্বীকার করে নেন পরিবহণ মন্ত্রী। এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘‘শহরে কোথায় কত সিসিটিভি প্রয়োজন তার তালিকা করে আমাকে জানান। পরিবহণ দফতর থেকে পুরো টাকাটাই বরাদ্দ করা হবে।’’ পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার এ দিন ঘোষণা করেন, পথ নিরাপত্তা নিয়ে নজরদারি জোরদার করতে প্রত্যেক মাসে ট্র্যাফিক গার্ডগুলির অফিস থেকে সিভিক পুলিশদের পুরস্কৃত করা হবে।