মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমা ছিল মঙ্গলবার দুপুর তিনটে পর্যন্ত। —ফাইল চিত্র।
মনোনয়ন প্রত্যাহার করা না হলে বাড়িছাড়া করার, এমনকি প্রাণেমেরে ফেলার হুমকি! পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই মর্মে পুলিশের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের কাছেও অভিযোগ দায়ের করেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। ঘটনাস্থল, ব্যারাকপুর ১ ও ২ ব্লকের কাঁপা-চাকলা, পানপুর-কেউটিয়া, কাউগাছি-১ এবং ব্যারাকপুর ২ ব্লকের বিলকান্দা ও বন্দিপুর এলাকা। ফোন করে হুমকি দেওয়া ছাড়াও বাড়ি গিয়ে শাসিয়ে আসার অভিযোগ উঠেছে।
মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমা ছিল মঙ্গলবার দুপুর তিনটে পর্যন্ত। বন্দিপুর পঞ্চায়েতের সিপিএমপ্রার্থী চান্দ্রেয়ী দাশগুপ্তের অভিযোগ, ‘‘এখানে শাসক দলের আশ্রিত গুন্ডাবাহিনী ফোন করে তোবটেই, বাড়ি এসে পর্যন্ত প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছে। আমরা বিষয়টি রহড়া থানায় জানাই। পুলিশ দেরিতে এসেছিল। আমাদের অভিযোগ শুধুমাত্র নথিভুক্ত করেছে। নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় সোমবার রাতে আমরা সবাই রহড়ায় দলীয় কার্যালয়ে আশ্রয় নিই। মঙ্গলবার সারা দিন সেখানেই ছিলাম। তবে কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহারকরিনি।’’ বন্দিপুরের ৯ নম্বর আসনের সিপিএম প্রার্থী সোমা দে বলেন, ‘‘যে দিন আমার নাম ঘোষণা হয়, সে দিন থেকেই আমার পরিবারের উপরে চাপ তৈরি করা হচ্ছে। সোমবার তৃণমূলের কয়েক জন পিস্তল নিয়ে বাড়িতে চড়াও হয়। বাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে। সকলেই চেনা মুখ। শাসিয়ে যায়, মনোনয়ন না তুললেপরিবারের ক্ষতি করবে। তৃণমূলের নেতারা সবই জানেন।’’
যদিও খড়দহ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা ব্যারাকপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শুকুর আলি বলেন, ‘‘হুমকিদেওয়ার ঘটনায় যাঁদের নাম শোনা যাচ্ছে, তাঁরা আমাদের দলের কর্মী নন। সমর্থক তো অনেকেই হন। বিরোধী দলের যে প্রার্থীরা ভয় পাচ্ছেন, তাঁদের বলব, নির্ভয়ে আমার কাছে আসুন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন। কেউ বাধা দেবে না।’’সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তথা ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের নেত্রী গার্গী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শাসক দলের নেতারা চাইছেন, সকলে তাঁদের বশংবদ হয়ে থাকুন। কেন?গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হলে এখন ওঁদের কেন অসুবিধা হচ্ছে? শুধু বন্দিপুর নয়, ব্যারাকপুর মহকুমার পাঁচটি পঞ্চায়েতেই মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত হুমকি দেওয়া হয়েছে।’’ একই অভিযোগ কাঁপা-চাকলা পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রার্থী চৈতালি মাঝিরও।
নির্বাচন আধিকারিকের দফতর থেকে জানানো হয়েছে, ব্যারাকপুর ১ ও ২ ব্লকে প্রায় সব ক’টিপঞ্চায়েতেই অল্পবিস্তর মনোনয়ন প্রত্যাহার হয়েছে। এর মধ্যে ব্যারাকপুর ২ ব্লকে সংখ্যাটা বেশি। বিরোধীদের মধ্যে বাম-কংগ্রেস জোটেরপ্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের সংখ্যা তুলনায় কম।