Coronavirus

লকডাউনে ‘সোর্স’ বাঁচাতে সজাগ নজর

পুলিশের একটি অংশ জানাচ্ছে, থানা থেকে গোয়েন্দা বিভাগ— সব অফিসারই লকডাউনে কাজ হারানো ওই সোর্সদের বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করেছেন।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২০ ০২:২২
Share:

প্রতীকী ছবি

অপরাধীদের হদিস পেতে ওঁরাই পুলিশের ‘চোখ-কান’ (সোর্স)। বহু ক্ষেত্রে মামলার কিনারা হয় ওঁদের জন্যই। লকডাউন সঙ্কটে তাই ওঁদের বাঁচাতে সক্রিয় কলকাতা পুলিশের উর্দিধারীরা। ওঁদের জন্য সরকারি ‘সোর্স মানি’ তো আছেই, তবে পকেট থেকেও টাকা দিতে কসুর করেন না অনেক অফিসার।

Advertisement

পুলিশের একটি অংশ জানাচ্ছে, থানা থেকে গোয়েন্দা বিভাগ— সব অফিসারই লকডাউনে কাজ হারানো ওই সোর্সদের বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করেছেন। কোথাও কমিউনিটি কিচেন করে সোর্স এবং তাঁর পরিবারকে রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে। আবার কোথাও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে দিয়ে চাল, ডাল-সহ জরুরি জিনিস দেওয়া হয়েছে সোর্সের হাতে। দু’মাসের বেশি সময় ধরে কলকাতা পুলিশ এলাকার বিভিন্ন থানা এবং গোয়েন্দা বিভাগের বিভিন্ন সেকশনের অফিসারেরা এ ভাবেই সোর্সের পাশে থেকেছেন। তবে গোপনীয়তা মেনে সামনে আসেননি অফিসারেরা।

গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করার পরে বর্তমানে থানায় কর্মরত এক ওসি জানাচ্ছেন, দফতর থেকে ‘সোর্স মানি’ বাবদ টাকা দেওয়া হয়। কোনও অপরাধের কিনারা হলে ওই খাতে অতিরিক্ত টাকাও মেলে। বর্তমানে সিসি ক্যামেরা ও মোবাইল ফোনের সাহায্য নিয়ে অনেক অপরাধের কিনারা হলেও ম্যানুয়াল সোর্সের গুরত্বও যথেষ্ট। একাধিক থানার অফিসারের দাবি, তাই নিজেদের মতো করে সোর্সদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডা দমন, ওয়াচ, চুরি দমন, মাদক দমন, ছিনতাই দমন শাখার অফিসারেরাও সোর্সদের পাশে থেকেছেন। সূত্রের দাবি, পার্ক সার্কাস, কলাবাগান, কসবা-সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে রয়েছেন এঁরা। তবে কলকাতা পুলিশের সোর্সরা অনেকেই থাকেন উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ প‍রগনায়। এ ছাড়া সুন্দরবন, ঘুঁটিয়ারি শরিফ, ক্যানিং, ভাঙড়, সোনারপুর, উস্তিতেও থাকেন অনেকে। সোর্সের বাড়ি দূরে হলে অনলাইনের মাধ্যমে তাঁদের কাছে টাকা চলে যায়।

কারা এই ‘সোর্স’? ছিঁচকে চোর, যৌনকর্মী, রাজনৈতিক দলের নিচুতলার কর্মীদের যে কেউ পুলিশের সোর্স বা চলতি কথায় খোচর। দাগি আসামি, মাদক ব্যবসায়ীও সোর্স হন। পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে, এমন লোককে সাধারণত এলাকার সোর্স হিসেবে ব্যবহার করা হয়। দুষ্কৃতীরা সাজা খেটে বেরোলেও তাঁদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন অনেক অফিসার। যাতে ওই সোর্স অপরাধ জগতের তথ্য দিয়ে পুলিশকে সাহায্য করতে পারেন।

অবসরপ্রাপ্ত এক গোয়েন্দা কর্তার কথায়, “দুষ্কৃতীদের খবর দুষ্কৃতীরাই রাখেন। তাই অপরাধের তথ্য জানতে তোষামোদ করতেই হয়। শক্তিশালী সোর্স হলে তাঁদের সংসারও টানতে হয় অনেক অফিসারকে।” তবে লকডাউন পর্বে একসঙ্গে এত সোর্সের খেয়াল রাখার বিষয়টি আগের সব হিসেবকেই ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement