প্রতীকী ছবি
সহজে আকর্ষক ছাড়ে ঋণের টোপ দিয়ে নেপাল থেকে চালানো প্রতারণা কারবার নিয়ে নাগরিকদের সতর্ক করলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। বৃহস্পতিবার লালবাজারে সিপি বলেন, ‘‘সমাজমাধ্যমে সহজে ঋণের ফাঁদে পা দেবেন না। প্রতারকেরা কিছু অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলে, যার সাহায্যে অনেক ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেয়। তার সাহায্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও তাঁর পরিচিতদের হুমকি দিয়ে মোটা টাকা আদায়ের ছক কষা হচ্ছে। এগুলি চিনা অ্যাপ। ডাউনলোড করবেন না।’’
সিপি-র কথায়, ‘‘দু’ডজন অভিযোগের তদন্ত চলছে। চক্রের মাথারা নেপালে। তবে কলকাতা পুলিশ এলাকার কয়েকটি কলসেন্টার এই অপকীর্তির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গিয়েছে।’’ এ ছাড়া, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এমনকি দুবাইয়েও চক্রের ডালপালা ছড়িয়েছে। নেপালে বোও এবং চাও নামে দুই চিনা নাগরিক এই চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশের দাবি।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই চক্রের সদস্যেরা টাকা আদায়ের জন্য ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করত। অর্থাৎ, যাঁদের সঙ্গে ওই চক্রের কোনও যোগ নেই তাঁদের কাছ থেকে কমিশনের বিনিময়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিত প্রতারকেরা। তদন্তকারী জানান, যাঁরা অনলাইনে গেম খেলতে অভ্যস্ত, তাঁদের নিশানা করে প্রতারকেরা। প্রথমে তাঁদের অ্যাকাউন্টে মোটা টাকা ঢুকিয়ে দিয়ে বলা হত তাঁরা লটারি জিতেছেন। এর পর টোপ দিয়ে তাঁদের অ্যাকাউন্ট ভাড়া হিসেবে নিয়ে নিত। এমনকি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টের ফোন নম্বরটি পর্যন্ত বদলে দিত প্রতারকেরা। যাতে পুলিশ অ্যাকাউন্টে ঢুকতে না পারে।
সেই সঙ্গে চাকরি দেওয়ার নাম করে অভিযুক্তেরা প্রতারিত করার জন্য লোক নিয়োগ করত। শর্ত থাকত, যে চাকরিতে যোগ দেবে সে নিজেই অফিস ভাড়া করবে, ভাড়ার টাকা সে নিজে দেবে। এমনকি তাঁর প্রয়োজনে লোকও সে নিজে নেবে। ‘চাইনিজ় লোন অ্যাপ’ নিয়ে প্রতারণার চক্রটি ওই ভাবেই নিজেদের জাল ছড়িয়েছিল যাতে কেউ তাদের খোঁজ না পান। কারণ, যে ব্যক্তিকে চাকরি দেওয়ার নামে অফিস ভাড়া করিয়ে তারা কাজে লাগিয়েছে, তার সঙ্গেও চক্রের মাথাদের সরাসরি যোগাযোগ ছিল না।
কলকাতার পুলিশ কমিশনার এ দিন আরও কয়েকটি প্রতারণার কারবার নিয়ে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, ‘‘সিইএসসি-র নাম করে বিল অনাদায়ে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করার বার্তাগুলি সাধারণত ভুয়ো। ফোনে বিষয়টি যাচাই না-করে ওই ফাঁদে পা দেবেন না। কলকাতা পুলিশ এখনও পর্যন্ত অনলাইন প্রতারণার ক্ষেত্রে ৯০ জনকে গ্রেফতার করেছে।’’