Durga Puja 2021

Durga Puja 2021: দু’টি টিকা নেওয়া থাকলেই মিলবে ভিআইপি পাস, অভিনব প্রচার বহু পুজো কমিটির

গত বছর করোনার জেরে আদালত মণ্ডপ দর্শকশূন্য রাখার নির্দেশ দেওয়ার পরেও এমন কার্ড হাতে হাতে ঘুরেছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:১৩
Share:

ফাইল চিত্র।

“একদল মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে, আর একদল ভিআইপি লাল গাড়ি ছুটিয়ে পুজো প্যান্ডেলে ঢুকে যাবে! এটা ঠিক নয়।” পুজোয় বৈষম্য কাটাতে যে ভিআইপি গেট এবং ভিআইপি কার্ড তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে এমন মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এ বার সেই ভিআইপি কার্ডই বহু পুজো কমিটির প্রতিষেধক নেওয়ার প্রচারের হাতিয়ার হতে চলেছে। দিন কয়েকের মধ্যেই প্রচার শুরু হবে, ‘প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ় নেওয়া থাকলে আপনিই ভিআইপি! প্রতিষেধক নেওয়ার শংসাপত্র দেখান আর ভিআইপি গেট দিয়ে ঢুকে ঠাকুর দেখুন!’

Advertisement

টালা বারোয়ারি পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা অভিষেক ভট্টাচার্য যেমন বললেন, “গত বার ছিল আমাদের শতবর্ষ। আদালতের নির্দেশের পরেও দর্শনার্থীর ঢল নেমেছিল প্রতিমা দর্শনের জন্য। ভিআইপি কার্ড রাখা বা না রাখায় পার্থক্য হয়নি। এ বার প্রথম থেকেই ভেবেছি, ভিআইপি কার্ডকেই কোভিড বিরোধী প্রচারে হাতিয়ার বানাব। যিনি প্রতিষেধকের দু’টো ডোজ় নেওয়ার শংসাপত্র দেখাবেন, তাঁকেই ভিআইপি কার্ড দেব।” দক্ষিণ কলকাতার সমাজসেবী সঙ্ঘ আবার মণ্ডপে প্রবেশের একটি পৃথক লেন বানাচ্ছে। যাঁদের প্রতিষেধকের দু’টো ডোজ় নেওয়া থাকবে, তাঁরা ওই লেন দিয়ে ঢুকতে পারবেন। বাকিদের প্রতিমা দেখতে হবে খানিক দূর থেকে। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা অরিজিৎ মৈত্র বললেন, “স্বেচ্ছাসেবকদের বলা রয়েছে, প্রতিষেধকের দু’টো ডোজ় নিয়েছেন এমন দর্শনার্থীরাই প্রতিমার কাছ পর্যন্ত পৌঁছতে পারবেন। ওই গেটের নামই ভিআইপি গেট। প্রতিষেধক নেওয়ার উৎসাহ দিয়ে বার্তাও থাকবে।”

একই রকম ভাবনাচিন্তা কাশী বোস লেন এবং লেক শিবমন্দির সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির। কাশী বোস লেনের পুজো উদ্যোক্তা সৌমেন দত্ত জানিয়েছেন, প্রতিষেধক নিতে উৎসাহ দানে প্রচারের ব্যবস্থা করছেন তাঁরা। সমাজমাধ্যমে প্রচার করছেন, পুজোর যে ভিআইপি গেট, তা শুধুই প্রতিষেধকের দু’টো ডোজ় নিয়েছেন এমন দর্শনার্থীদের জন্য। শিবমন্দিরের পুজোকর্তা পার্থ ঘোষ বললেন, “এমনি ভিআইপি গেটে বাধা আছে। কিন্তু কোভিড সচেতনতা প্রচারে, প্রতিষেধক নেওয়ার উৎসাহ দানে ব্যবহার করলে সমস্যা থাকবে না। বহু পুজো এ বার ওই পথেই হাঁটবে ভাবছে।”

Advertisement

২০১৯ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভিআইপি গেট এবং ভিআইপি কার্ড তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পরে বহু পুজো কমিটির প্রশ্ন ছিল, পাড়ার অনেকেই পুজোর কাজে যুক্ত থাকেন। ভিআইপি গেট না থাকলে তাঁদেরও লাইন দিয়ে ঢুকতে হবে। সেটা কি সম্ভব? অনেকে প্রশ্ন তোলেন, বিশেষ ভাবে সক্ষম মানুষের পাশাপাশি ভিন্‌ রাজ্য বা বিদেশ থেকেও অনেকে পুজোদেখতে আসেন। পর্যটন দফতর থেকেই তাঁদের পুজো দেখানো হয়। তাঁদেরও কি সর্বক্ষণ লাইনে দাঁড় করিয়ে পুজো দেখানো যায়? অনেকে আবার ভিআইপি গেট বা ভিআইপি কার্ড থেকে পুজো কমিটির যে আয় হয়, সেটাও কী করে হবে সেই প্রশ্ন তোলেন। এর পরেই ভিআইপি কার্ডের বদলে ‘আমন্ত্রিত সদস্য’ লেখা কার্ডের রমরমা শুরু হয়। গত বছর করোনার জেরে আদালত মণ্ডপ দর্শকশূন্য রাখার নির্দেশ দেওয়ার পরেও এমন কার্ড হাতে হাতে ঘুরেছে বলে অভিযোগ। সেই প্রেক্ষিতে এই ভাবনাকে অনেকেই স্বাগত জানাচ্ছেন।

বালিগঞ্জ কালচারালের পুজোকর্তা অঞ্জন উকিলের মন্তব্য, “ভাবনাটা ভাল। কিন্তু শংসাপত্র দেখে এত লোককে ঢোকানো মুশকিল। প্রশাসনিক ভাবে এমন কিছু করার পরিকল্পনা হলে নিশ্চয় বেশি করে ভাবব।” হিন্দুস্থান পার্কের পুজোকর্তা সুতপা দাস বললেন, “এখনও ভিআইপি কার্ড বা ভিআইপি গেট নিয়ে কিছু ভাবিনি। তবে প্রতিষেধক নেওয়ায় উৎসাহ দানে ব্যাপারটা কাজে লাগানো গেলে তো ভালই।” শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের পুজোকর্তা দিব্যেন্দু গোস্বামী যদিও বললেন, “ডোজ় গুনে লোক ঢোকানো কি সহজ কথা? আমরা আমন্ত্রিত অতিথির কার্ডই রাখছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement